শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সোনালি আঁশের দুর্দিন

বিদেশে পাটের বাজার সৃষ্টির উদ্যোগ নিন

চলতি ২০২৩-এর বর্ষপণ্য হিসেবে পাটকে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এ ঘোষণা পাট ও পাটশিল্পের উত্থানে অবদান রাখবে এমনটি আশা করা হলেও ঘটছে তার উল্টো। লোকসানের কারণে কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ খরচ বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচ না ওঠা, উপকরণের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা কারণে পাট চাষের পরিমাণ এ বছর কমেছে। ন্যায্য দাম না পেয়ে কৃষক চরম হতাশ। আন্তর্জাতিক বাজারেও পাটপণ্যের চাহিদা কমেছে। পাটজাত পণ্যকে ২০২৩-এর বর্ষপণ্য ঘোষণা করা হয়েছিল অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতি করে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু এ বছরই পাটের মান ও দামে অখুশি কৃষক। চলতি বছর পাটের যে মান তাতে রপ্তানিতে নেতিবাচক কিছু ঘটবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাটের সুতা ও টুইন থেকে রপ্তানি আয়ও কমেছে। পাট অধিদফতরের পরিসংখ্যানে ২০১৭-১৮ সালে মোট কাঁচা পাট উৎপাদন হয়েছিল ৯২ লাখ বেল। আর ২০২১-২২ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭১ লাখ বেল। কাঁচা পাট রপ্তানি ২০১৭-১৮ সালে ছিল ১৪ লাখ বেল আর ২০২১-২২ সালে ৮ লাখ বেল। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের ক্রেতা পাটের পরিবর্তে কটন ও সিল্ক দিয়ে তৈরি পণ্য কিনছে। বহির্বিশ্বে পাটপণ্যের চাহিদা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে। জলবায়ু পরিবর্তন পাট চাষিদের জন্য অভিশাপ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। পাটে জাগ দেওয়ার মতো পানির অভাব দেখা যাচ্ছে ক’বছর ধরে। পাট চাষে খুব একটা লাভ না থাকায় কৃষক সবজি উৎপাদনে আগ্রহ দেখাচ্ছে। চলতি বছর পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা যে অর্জিত হবে না তা ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় ভবিষ্যতে কৃষককে পাট চাষে উৎসাহিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আবহাওয়াগত কারণে পাটের মান হ্রাস পাওয়ায় পাটসংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ বেড়েছে। দেশে পাটকলের সংখ্যা আড়াই শর বেশি। পাটশিল্প টিকিয়ে রাখতে এ শিল্পের উদ্যোক্তাদের এখন থেকেই সক্রিয় হতে হবে। নিতে হবে বিদেশে পাটের বাজার সৃষ্টির পরিকল্পনা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর