সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাঁশখালী বেড়িবাঁধ

ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিন

উপকূলবাসীর জানমালের নিরাপত্তায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মাণ করা হয়েছিল স্থায়ী বেড়িবাঁধ। নির্মাণের পর বছর না ঘুরতেই বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকায় নির্মিত বাঁধ ধসে পড়ছে কোনো জলোচ্ছ্বাস ছাড়াই। বাঁশখালীর অধিবাসীদের আতঙ্কে ফেলেছে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনা। ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারায় বাঁশখালীর ৪০ হাজার মানুষ। বেড়িবাঁধ নির্মাণ এ জনপদের মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। কিন্তু খানখানাবাদ উপকূলের কদমরসুল গ্রামে জোয়ার-ভাটার স্রোতে ১০ দিন ধরে বেড়িবাঁধটি ভাঙতে শুরু করায় এলাকাবাসী আতঙ্কে ভুগছে। তাদের অভিযোগ, বেড়িবাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি এবং নকশায় ত্রুটি থাকায় শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা স্থায়ী বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাচ্ছে। কদমরসুল গ্রামে বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদীর মোহনায় প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে বঙ্গোপসাগরে তলিয়ে যাচ্ছে। ভেঙে পড়া বেড়িবাঁধের পাশে পানির গভীরতা ১০০ থেকে ১৩০ ফুট। এর বিপরীত অংশে বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠেছে প্রায় ২ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক বালুচর। স্মর্তব্য, বাঁশখালী উপজেলার বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদীর পাড়ে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প একনেকে পাস হয় ২০১৫ সালে। ব্যয় ধরা হয় ২৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। কয়েক দফা সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৬.২ কিলোমিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ, ভাঙন রোধ ও পুনরাকৃতিকরণ, ৩.৮ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ এবং ৫.৬ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ করার কথা ছিল। চট্টগ্রামে বাঁশখালী স্থায়ী বেড়িবাঁধের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে সাগরে জেগে ওঠা ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের সামুদ্রিক চরের কারণে। এর ফলে সাঙ্গু নদীর গতিপথ পাল্টে ঢেউ আছড়ে পড়ছে বেড়িবাঁধে। সমুদ্র চর ড্রেজিং হলে বেড়িবাঁধ রক্ষা পাবে এমন কথাই বলছেন প্রকৌশলীরা। বেড়িবাঁধের ভাঙন রোধে ২০ হাজার জিও ব্যাগ বরাদ্দ করা হয়েছে পাউবোর পক্ষ থেকে। কিন্তু তা ভাঙন রোধে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। বেড়িবাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর