দেশে কোটিপতির সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে সামাজিক বৈষম্য। এ মুহূর্তে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি টাকার বেশি জমা রয়েছে এমন সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার। যা দেশের ব্যাংক খাতের মোট আমানতের ৪৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর মার্চ প্রান্তিকে আমানতকারীদের মোট অ্যাকাউন্ট ছিল ১৪ কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫৬টি। তাতে মোট জমা ছিল ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। ১ কোটি টাকার বেশি আমানতের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ১৯২টি। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ৩ হাজার ৩৬২টি আর এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৫ হাজার ৯৭টি। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১ কোটি এক টাকা থেকে ৫ কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৭৭২টি। এসব অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। ৫ কোটি থেকে ১০ কোটি ১২ হাজার ২৪৫টি অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ৮৬ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। এ ছাড়া ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা রয়েছে ৪ হাজার ৮১টি, ১৫ থেকে ২০ কোটির মধ্যে ১ হাজার ৮৬৫টি, ২০ থেকে ২৫ কোটির মধ্যে ১ হাজার ২৭৬টি, ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৯০৯টি আমানতকারীর অ্যাকাউন্ট। ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৫০৭টি এবং ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৩৫৩টি, ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা ৭২২টি। এ ছাড়াও ৫০ কোটি টাকার বেশি ১ হাজার ৮২৪টি। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪ কোটি ৫৯ লাখ ৭৩ হাজার ১৯২টি। যেখানে জমা ছিল ১৬ লাখ ৮৭ হাজার ২৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল মাত্র পাঁচটি। ৫২ বছরের ব্যবধানে সে সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজারে উন্নীত হওয়া বিস্ময়কর বৈকি। দেশের প্রায় ১৪ কোটি ৬০ লাখ অ্যাকাউন্টধারীর ৪৩ শতাংশের বেশি অর্থ তাদের কাছে পুঞ্জীভূত হওয়া সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধির চিত্রই তুলে ধরছে। এ চিত্র আর যাই হোক সুস্থতার পরিচায়ক নয়।