সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সাইবার প্রতারণা

অপরাধীদের মনে ঢুকাতে হবে ভয়

সাইবার অপরাধের নির্মম শিকার দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। চাকরি ও পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে এ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের একাংশের অসচেতনতার সুযোগে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন তাদের গবেষণা জরিপে বলেছে, বাংলাদেশে ২০২২ সালে সাইবার দুর্বৃত্তরা প্রতারণার জন্য নিত্যনতুন ও অভিনব কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। তাদের অপরাধের মধ্যে রয়েছে নানামাত্রিক প্রতারণা। যেমন চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস, ভুয়া অ্যাপে ঋণ দেওয়ার ফাঁদ, সেবা বা পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণা ইত্যাদি। ২০২২ সালে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশই অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের ৭৫ শতাংশই তরুণ, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধের ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীর হার ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগীদের মধ্যে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সংখ্যা দিন দিন কমছে। ২০১৮ সালের জরিপে যেখানে অভিযোগকারীর সংখ্যা ছিল ৬১ শতাংশ, ২০২৩ সালে গিয়ে তা কমে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছে। আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে প্রচলিত আইন সম্পর্কে না জানা, যার পরিমাণ ২৪ শতাংশ, এরপরই আছে ২০ শতাংশের বিষয়টি গোপন রাখার প্রবণতা এবং তিন নম্বর কারণ আইনি ব্যবস্থা নিয়ে উল্টো হয়রানির আশঙ্কায় ১৮ শতাংশ। সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে দেশে কার্যকর আইন থাকলেও আইনি ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থার অভাব এবং বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতার কারণে মানুষ সেদিকে যায় না এটি একটি ওপেন সিক্রেট। মানুষের এই আস্থাহীনতা অপরাধীদেরই সুযোগ করে দিচ্ছে। তারা নির্দ্বিধায় অপরাধ সংঘটনে সাহসী হচ্ছে। সাইবার অপরাধ দমনে আইন থাকলেও অপরাধের বিপরীতে আইনের প্রয়োগ সীমিত। অপরাধ দমনে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইনের আশ্রয় নিতে গিয়ে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা জরুরি। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতার অবসান ঘটিয়ে দ্রুত বিচারের সংস্কৃতি চালু করা দরকার।

সর্বশেষ খবর