মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্লাস্টিক বর্জ্য

পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা

প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ও খালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। অনিবার্য করে তুলছে জলাবদ্ধতা। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশই প্লাস্টিক বর্জ্য। এসব বর্জ্যরে অধিকাংশ রাস্তা, ড্রেন, খালসহ জলাশয়ে ফেলা হচ্ছে। যেগুলো ড্রেনে আটকে বৃষ্টির পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তুলে জলাবদ্ধতার অভিশাপ নিশ্চিত করছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের একটি। ২০০৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এর ব্যবহার ৩ গুণের বেশি বেড়েছে। ঢাকায় একবার ব্যবহারের পর এর ৮০ শতাংশ মাটিতে ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকে নালা ও খাল হয়ে নদীতে পড়ে সর্বশেষ ঠাঁই হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে। নদী হয়ে সাগরে যাওয়া প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণে বিশ্বে বাংলাদেশ এখন ষষ্ঠ স্থানে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ঢাকা শহরে প্রতিদিন গড়ে ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। ১ কোটি ৪০ লাখ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে অবচেতন মনে অন্যান্য বর্জ্যরে সঙ্গে ফেলা হচ্ছে। ১০০-এর বেশি ফ্যাক্টরিতে এসব পলিথিন ব্যাগ তৈরি হয়। পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করে দেশে আইন হয়েছে দুই দশকের বেশি আগে। কিন্তু আইন প্রয়োগের অভাবে তা কোনো সুফল বয়ে আনছে না। পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও উৎকোচের বদৌলতে থেমে

নেই উৎপাদন। সারা দেশে এর ব্যবহার অতিমাত্রায় পৌঁছেছে। এরকম একটি অপচনশীল পণ্য খাল, নদীসহ সব জলাশয়ে ফেলায় সেগুলো ক্রমাগতভাবে ভরাট হচ্ছে। তা থামানোর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের নাকের ডগায় পুরান ঢাকায় নির্বিচারে পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য তৈরি হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য ও পলিথিনের আগ্রাসন ঠেকাতে আইন প্রয়োগকারীদের সুমতি নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষত যাদের যোগসাজশে পলিথিন কারখানাগুলো টিকে আছে তাদের উৎকোচে বাধা সৃষ্টি করতে হবে। নইলে আইন কিতাবেই সীমাবদ্ধ থাকবে। জাতির সঙ্গে শত্রুতায় লিপ্ত পলিথিন ব্যবসায়ীদের কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।

সর্বশেষ খবর