শিরোনাম
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাদক আগ্রাসন

এ দৈত্যকে ঠেকাতে হবে

সমাজব্যবস্থায় অস্থিরতা সৃষ্টি করছে মাদকাসক্তির অভিশাপ। সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে মাদকের আগ্রাসনে। এ দেশের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির সন্তান সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় তরুণ বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন মাদকাসক্তির কারণে। অতি অভিজাত পরিবারের সন্তান থেকে হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তান সবাইকে কেড়ে নিচ্ছে মাদকাসক্তির প্রবণতা। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনেও তা সৃষ্টি করছে অকাম্য আঘাত। মাদক আগ্রাসন সমাজব্যবস্থায় অস্থিরতা সৃষ্টি করলেও এই দৈত্যকে প্রতিহত করার কার্যকর উদ্যোগ নেই বললেই চলে। এটি প্রতিহত করার দায়িত্ব যাদের, তাদের যোগসাজশেই চলছে এ ঘৃণ্য ব্যবসা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, এমনকি মাদক নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানেন কোথায় কোথায় মাদক বিক্রি হয়। জানেন কোন রুট দিয়ে মাদক পাচার হয়। এসব রোধের দায়িত্ব যাদের তারা তাদের বিবেককে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বন্ধক রাখায় মাদকাসক্তির নোংরা দৈত্যকে কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। দেশে যত খুন-খারাবি, হাইজ্যাক ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে তার অন্তত ৮০ শতাংশের সঙ্গে মাদকের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। আশির দশকে এ দেশে হেরোইনের আগ্রাসন ঘটে। এই দশকের শেষের দিকে ফেনসিডিল মাদক রাজ্যের পরিচালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। নব্বই দশকের শেষ দিকে ইয়াবার আগমন ঘটে। প্রথমদিকে এ আগ্রাসনকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকা। রাজধানীর অভিজাত তরুণ-তরুণীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইয়াবায় আসক্ত। এ নেশার অর্থ জোগাতে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে রাজধানীসহ সারা দেশের বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী। অভিজাত এলাকার ক্লাব, রেস্তোরাঁ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাদকের নেটওয়ার্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ইয়াবার নেশায় তাৎক্ষণিকভাবে হƒদস্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের কিছু কোষের অপমৃত্যু ঘটে। এভাবেই হƒৎপি- এবং ফুসফুস ও কিডনি বিকলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ইয়াবা আসক্তরা। এ মরণনেশা প্রতিরোধে সীমান্তে কড়াকড়ি প্রহরা দরকার। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে তাদের মধ্যে ভয় ঢোকাতে হবে। মাদকাসক্তদের সুচিকিৎসার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে হবে এর থাবা থেকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর