শিরোনাম
রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ওষুধের দাম বৃদ্ধি

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশবাসী যখন দিশাহারা তখন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে ওষুধের দাম যথেচ্ছভাবে বাড়ার ঘটনা। ফলে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য পরিচর্যার খরচ বিপুলভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে গরিব মানুষ পড়েছে বিপাকে। বয়স্করা যারা পরিবারের অন্য সদস্যদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল তাদের অসহায়ত্ব সহজেই অনুমেয়। ডলারের দাম বাড়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধিকে ওষুধের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে বলছে ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশের ওষুধের বাজারে প্রায় ১ হাজার ৬৫০টি জেনেরিকের ২৫-৩০ হাজার প্রোডাক্ট চালু আছে। এর মধ্যে ১১৭টি জেনেরিকের ৪৬০টি ওষুধের দাম ঔষধ প্রশাসন নির্ধারণ করে। অন্যগুলো কোম্পানি খরচ হিসাব করে একটি দাম প্রস্তাব করে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ভ্যাট সংযোজন করে দাম সমন্বয় করে দেয়। কাঁচামালের দাম বাড়ার অজুহাত তুলে প্রতিটি ওষুধ কোম্পানি অধিকাংশ ওষুধের দাম বাড়িয়ে নিয়েছে। নিয়মিতভাবেই ওষুধের দাম বাড়ানোর আবেদন ঔষধ প্রশাসনে জমা পড়ে। টেকনিক্যাল কমিটি এবং মূল্য নির্ধারণে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি এগুলো পর্যালোচনা করে অনুমোদন দেয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ৬৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ৬৪ শতাংশ ব্যয় হয় ওষুধে। গবেষকদের মতে, ‘দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হুহু করে বাড়ছে জরুরি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম। এ দৌড়ে পেরে উঠছে না মানুষ। দেশের শীর্ষ ছয় প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ২৩৪টি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে।

দাম বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে কোম্পানিগুলো বলেছে করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, ডলার সংকট, এলসি জটিলতা, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোসহ সরবরাহ সমস্যা, মোড়ক, পরিবহন, বিপণন ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি। আকস্মিক দাম বাড়ানোর ফলে অনেক রোগী ওষুধ কিনতে পারছেন না। খরচের প্রায় অর্ধেক অর্থ ব্যয় করে ডাক্তারের পেছনে। দাম কমাতে সেদিকে হাত দেওয়ার কথা ভাবতে হবে। এ বিষয়ে সরকার নজর দেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর