সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জাহাজ থেকে তেল চুরি

লোকদেখানো নয় আসল অভিযান চালান

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারী দেশি-বিদেশি জাহাজ থেকে তেল চুরির অপকর্মে সক্রিয় অর্ধশতাধিক চোরচক্র। কর্ণফুলী নদীতে তাদের দাপটও অপ্রতিরোধ্য। চৌর্যবৃত্তিতে বাধা দেওয়া কর্তব্য যাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেসব সদস্য সব দেখেও না দেখার ভান করেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হলে কর্তাব্যক্তিরা বলেন, চোরদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রতি মাসে দুই-তিনটি মামলাও হয়। তারা চেষ্টা করছেন নিয়ন্ত্রণ করতে। তবে বোদ্ধাজনদের মতে, তেল চোরদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান লোকদেখানো। চোর ধরা নয়, নিজেদের ভাগ বাড়ানোর জন্য তারা তৎপরতা দেখান। স্মর্তব্য, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য আসে বিভিন্ন ধরনের জাহাজ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব জাহাজ নিজেদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জ্বালানি তেল নিয়ে আসে। অতিরিক্ত তেল স্থানীয় চোরচক্রের সদস্যদের কাছে কম দামে বিক্রি করে দেয়। চোরাইভাবে এ তেল দেশে প্রবেশের কারণে সরকারকে শুল্ক পরিশোধ করতে হয় না। তাই অনেক কম দামে চোরাই তেল খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। আনুমানিক হিসাবে প্রতিদিন কর্ণফুলী নদীতে ৫০ থেকে ৮০ হাজার লিটার চোরাই তেলের ব্যবসা হয়। এসব তেলের মূল বিক্রেতা বিদেশি জাহাজ, দেশি কার্গো ভ্যাসেল, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার জাহাজ, ব্যক্তিমালিকানাধীন ফিশিং ট্রলার ও নৌকা। তেল চোরচক্রের সদস্যরা প্রতি লিটার তেল ৪৩ থেকে ৪৫ টাকায় কেনেন। পরে সেই তেল পাইকারদের কাছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করেন। তাদের কাছ থেকে একশ্রেণির ডিপো মালিক ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় লিটার দরে কিনে নেন। জাহাজ থেকে চোরাই তেল কেনার পর তা কর্ণফুলী নদীর ১৫ পয়েন্টে খালাস হয়। চোরাই তেলের জমজমাট ব্যবসার জন্য কর্ণফুলীর আশপাশ এলাকায় গড়ে উঠেছে বহু সংখ্যক অবৈধ ডিপো। রাজনৈতিক টাউটদের সঙ্গে যে এ ব্যবসার সুস্পষ্ট সংযোগ রয়েছে তা একটি ওপেন সিক্রেট। চুরি বন্ধে নৌ-পুলিশের ওপর ভরসা না করে র‌্যাবসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকেও কাজে লাগাতে হবে। চুরি বন্ধে এটা ভালো উপায় বলে বিবেচিত হবে।

সর্বশেষ খবর