মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ

অর্থনীতির জন্য বিষফোড়া

দেশের অর্থনীতিতে যন্ত্রণাদায়ক বিষফোড়া হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে খেলাপি ঋণ। খেলাপির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার বদলে শনৈ শনৈ বেড়ে চলেছে। তা ইতোমধ্যে দেড় লাখ কোটির অঙ্ক ছাড়িয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুস্থতা ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় থাকলেও তা যে একের পর এক অশ্বডিম্ব প্রসব করে চলেছে, খেলাপি সংস্কৃতির বিস্তার তারই প্রমাণ। ২০২৩ সালের জুন শেষে দেশের ব্যাংকগুলো ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে; যার মধ্যে খেলাপি হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। খেলাপি ঋণের এ পরিমাণ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তিন মাস আগে মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সে হিসেবে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ এপ্রিল-জুন মেয়াদে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। জানুয়ারি-মার্চ প্রথম তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ কমানোর প্রতিশ্রুতি রয়েছে সরকারের শীর্ষ মহলের। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যও অভিন্ন। তার পরও ঋণ বাড়া দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রত্যাশিত। খেলাপি ঋণ যখন অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে, তখন রেমিট্যান্স আয়ে ধস নামার বিষয়টিও পীড়াদায়ক হয়ে উঠেছে। সদ্যবিদায়ী সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার; যা গত মাসে ১৬ শতাংশ কমেছে। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪ হাজার ৭১২ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে। এটি গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স আয়। প্রবাসী আয় কমছে হুন্ডির কারণে। এর সঙ্গে অশুভ রাজনীতি জড়িত এমন সন্দেহও রয়েছে। হুন্ডি বন্ধে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিলে প্রবাসী আয় বৈধপথে আসার হার অন্তত ২৫ ভাগ হারে বৃদ্ধি পেত। প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীলরা কোন পথে বিদেশ থেকে অর্থ পাচ্ছে, সেদিকে নজর রাখলে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ আসা বন্ধ হবে। ডলার সংকটের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।

সর্বশেষ খবর