বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ধীরগতির ঢাকা

চাই যানজট মোচনে উদ্যোগ

একবিংশ শতাব্দীকে বলা হয় গতিময় শতাব্দী। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন এক দিনেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়া যায়। এমনকি এক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী কোনো দেশে গিয়ে ফিরেও আসা সম্ভব। অথচ গতিশীলতার এই যুগে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা দুনিয়ার অন্যতম ধীরগতির শহর হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। মেগা সিটি ঢাকাকে নিয়ে দেশবাসীর সহজাত গর্ব থাকলেও সে অহংকার মুহূর্তে উবে যায় যানজটের অচল নগরী হিসেবে ঢাকার অটল অবস্থানে। রাজধানীতে প্রতিদিন চলাচল করে লক্ষাধিক রিকশা। প্রধান প্রধান সড়কে রিকশা এবং এ জাতীয় পরিবহনের অবাধ চলাচল রাজধানীকে ধীরগতির শহর বানাতে অবদান রাখছে। সড়কের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি ডেকে আনছে বিড়ম্বনা। প্রতিদিন সড়কে ২৫০টির মতো ব্যক্তিগত গাড়ি নামছে। ঢাকা শহরের গতি বাড়াতে হলে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে গণপরিবহন ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে। ১৯৯৭ সালে ঢাকায় গাড়ির গতি ছিল ২৫ কিলোমিটার। ২০১৫ সালে ছিল ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার। প্রতিদিনই রাস্তায় ছোট গাড়ি নামার ফলে এ অবস্থার উদ্ভব ঘটছে। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না- বিপুল ব্যয়ে প্রকল্প প্রণয়নই শুধু করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার যানজটে প্রতি ২ ঘণ্টায় ৪৬ মিনিট নষ্ট হয়। এর ফলে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। যানজটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির মুখোমুখি রাজধানীবাসী। যানজটে প্রথমত উৎপাদনে ক্ষতি হচ্ছে। স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়ছে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে শারীরিক নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। এই শারীরিক সমস্যা সমাধানে চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই চিকিৎসায় ব্যয় হয় টাকা। একই সঙ্গে যানজটের প্রভাব বায়ুর ওপরও পড়ছে। ঢাকা শহরে বায়ুদূষণ বাড়ছে। প্রায়ই দূষণে নম্বর ওয়ানে থাকছে ঢাকা। রাজধানীর যানজটের অবসানে সড়ক থেকে রিকশার বিদায় ঘটাতে হবে। যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে। ফুটপাত দখল এবং ভাড়া দেওয়ার অপকর্ম কঠোরভাবে দমন করতে হবে। ট্রাফিক শৃঙ্খলা মেনে চলার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত হলে কাক্সিক্ষত সুফল পাওয়া যাবে। নাগরিক সচেতনতাও গড়ে তোলা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর