দেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার সর্বকালের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ। হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ১৫ লাখ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম কিন্তু অক্টোবরেও এ বছর তার আগ্রাসন অনুভূত হওয়ায় বছরজুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে এমন শঙ্কাও করা হচ্ছে। দেশে ২০০০ সালে ডেঙ্গু চিহ্নিত হওয়ার পর থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ৮৫৩ মানুষের মৃত্যু হয়। আর এ বছর অক্টোবর পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে হাজারেরও বেশি। ঢাকা শহর ছাড়িয়ে ডেঙ্গু এখন দেশের ৬৪ জেলা শহরে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়েছে ব্যাপকভাবে। ডেঙ্গু নিয়েই বসবাস এখন অনিবার্য বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার সারা দেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৭৯৯ জন, মারা গেছেন ১৩ জন। ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৮২ জন, ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ২ হাজার ১১৭ জন। সরকারি হিসাবে ঢাকার হাসপাতালে এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৮৫ হাজার ১৪০ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৫৪৩ জন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৯ হাজার ১৯৮ জন। লক্ষ্যণীয় প্রবণতা অনুযায়ী বৃষ্টির মৌসুম থেমে গেলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে। তবে বাংলাদেশে ডেঙ্গু সারা বছর ছড়ি ঘোরালে তেমন আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তাই যেসব পাত্রে বৃষ্টি ছাড়াও পানি জমা হয় অথবা নাগরিকরা পানি জমিয়ে রাখেন সেসব পাত্রে সারা বছরই এডিস মশার প্রজনন হতে পারে। ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে যেন নিজ বাড়ি এবং বাড়ির আঙিনায় কোনো পানি জমা না থাকে। ডেঙ্গুর হাত থেকে রেহাই পেতে হলে বছরজুড়ে এডিস মশার লার্ভা নিধনের কর্মসূচি বজায় রাখতে হবে। এ ব্যাপারে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করার পাশাপাশি মশা নিধনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। স্কুল-কলেজের ছাত্র, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে এ ব্যাপারে কাজে লাগানো যেতে পারে।