বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কার স্বার্থে এই বৈষম্য

বিভ্রান্তমূলক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন

বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর নতুন করে ২৭.৫০ শতাংশ কর আরোপের উদ্দেশ্য রাজস্ব বাড়ানো, না সরকারকে বিপদে ফেলা- তা একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের তিন মাস আগে এমন বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত দেশের বেসরকারি চাকরিজীবীদের কাছে সরকারি দলের গ্রহণযোগ্যতায় আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কা ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের সিংহভাগ বেসরকারি চাকরিজীবীদের চেয়ে গড়ে ৬০/৭০ শতাংশ বেশি বেতন পান। তারা কাজও করেন বেসরকারি চাকরিজীবীদের অর্ধেক, এমনকি গড়ে এক-তৃতীয়াংশ। ছুটি ভোগ করেন অন্তত পাঁচ গুণ। উৎকোচ ছাড়া সরকারি অফিসে সেবা পাওয়া যায় কি না তা নিয়ে তদন্ত হলে সরকারি প্রতিষ্ঠান পোষার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। অথচ তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড করমুক্ত হলেও বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের আয়ের ওপর নতুন করে ২৭.৫০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। এ ধরনের বৈষম্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মীবান্ধব উদ্যোগ নিতে নিরুৎসাহী করবে। নতুন আয়কর আইনে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের আয়ে ২৭.৫০ শতাংশ কর আরোপের বিধান যুক্ত করা হলেও তা আগে ছিল সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। তবে কীভাবে এই আয়কর আদায় করা হবে সে বিষয়ে এখনো ঘোষণা দেয়নি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। উল্লেখ্য, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা আর দফতরে কাজ করেন প্রায় ১৪ লাখ মানুষ। প্রজাতন্ত্রের এই কর্মকর্তা-র্কমচারীদের চাকরি শেষে অবসর ভাতা দেওয়া হয় রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। পদের গ্রেড আর বেতন হিসেবে এই অবসর ভাতা নির্ধারিত হয়। কর্মীর অবর্তমানে তার পরিবারও এই পেনশন সুবিধা পায়। আছে ভবিষ্যৎ তহবিল বা প্রভিডেন্ট ফান্ড। এর বাইরেও চাকরি শেষে এককালীন এক বছর ছয় মাসের মূল বেতন দেওয়া হয়। তা গ্রাচ্যুইটি বা আনুতোষিক ভাতা নামেও পরিচিত। তবে এসব সুবিধার বেশির ভাগই পায় না বেসরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকরিজীবীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বদলে কর্তনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করবে। নিজেদের স্বার্থেই সরকারের উচিত এই বিভ্রান্তমূলক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর