শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সময়মতো নির্বাচন হয়েই যাবে

মেজর (অব.) আখতার

সময়মতো নির্বাচন হয়েই যাবে

জনগণ চায় আগামী সংসদ নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন। জনগণের একটি বিশাল অংশ তথা দেশের তরুণ সমাজ যারা ২০০৮ সালের পরে ভোটার হয়েছে কিন্তু ভোট দিতে পারে নাই- এখন ভোট দিতে মরিয়া। নতুন তরুণ ভোটাররা যদি তাদের ইচ্ছামতো স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে না পারে তাহলে তারা দারুণভাবে হতাশ ও মর্মাহত হবে। হতাশ ও মর্মাহত তরুণ শক্তি হয়তো তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে সামনে এগিয়েও যেতে পারে। তখন যদি কোনো নতুন নেতৃত্ব তাদের পথ দেখাতে পারে হয়তো তখন রাজনীতিতে নতুন মোড় নিতে পারে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, শুধু তরুণ নেতৃত্বেই পরিবর্তন হয়ে থাকে। আজ এটি চরম বাস্তব সত্য যে, যারা বর্তমানে দেশ, জাতি ও সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছে আজ থেকে ৩৩ বছর আগে ১৯৯০ সালে সবার বয়স ছিল আজ থেকে ৩৩ বছর কম অর্থাৎ সবার বয়স ছিল ৪৫ বছরের নিচে। সেদিন কিন্তু বিশাল জনগোষ্ঠীর বয়সও ছিল ৪৫ বছরের নিচে। ওই তরুণ নেতৃত্বে জনগণ সেদিন পরিবর্তন এনেছিল। আজকের জনগণেরও বিশাল অংশ ৪৫ বছরের নিচে; তন্মধ্যে কোটির বেশি মানুষ এখনো একবার ভোট দিতে পারে নাই। তারা অধৈর্য হয়ে যাচ্ছে। চরমভাবে অধৈর্য হয়ে যাচ্ছে। তারা ভীষণভাবে নেতৃত্ব শূন্যতায় ভুগছে। প্রাকৃতিক আমোঘ নিয়মে এই শূন্যতা থাকবে না। যে কোনো সময়ে, পরিস্থিতিতে, প্রেক্ষাপটে বা সৃষ্ট ঘটনায় নতুন তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টি হবেই। এটাই প্রকৃতির বিধান। সৃষ্ট নতুন নেতৃত্বের কালো অতীত থাকবে না, পিছুটান থাকবে না, আপসকামী হবে না, লোভী বা ভীতু হবে না। ত্যাগই হবে তাদের মূলব্রত এবং পরিবর্তনই হবে তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য। যদি আগামী নির্বাচনে নতুন তরুণ ভোটারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের ভোট দিতে না পারে তাহলে তরুণদের ক্ষোভ দাবিয়ে রাখা কঠিন হবে। এই তরুণদের দাবি একটাই- তারাও জনগণের সঙ্গে নিজের ভোট নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নিরাপদে, নির্ভয়ে ও নিঃশঙ্কচিত্তে অবাধে দিতে চায়। মনে হয় না এর ব্যত্যয় তারা মেনে নেবে।

সরকারও চায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। খোদ প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে পরিষ্কার বক্তব্য দিচ্ছেন আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। সরকারও বুঝতে পারছে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলে তা দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না। হয়তো সরকার তার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে একতরফা নির্বাচন বা বিভিন্ন গোপন আঁতাতের মাধ্যমে সর্বদলীয় নির্বাচন করাতে পারে। কিন্তু যদি সে নির্বাচনে জনগণ অবাধে ও স্বাচ্ছন্দ্যে নিজের ভোট নিজে না দিতে পারে তাহলে জনমনে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ফলে রাষ্ট্র পরিচালনা সুখকর হবে না। উপরন্তু জনরোষ বিস্ফোরিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রতিহত করতে সরকারকে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকতে হবে। মোদ্দাকথায় বলা যায়, দেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা অর্জন করা সম্ভব হবে না। হয়তো সরকার উদার হস্তে জনগণের কল্যাণে ব্যয় বাড়িয়ে দিয়ে বা চোখ ধাঁধানো উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণকে শান্ত রাখার চেষ্টা করবে। তাতে প্রশাসনের ক্ষমতা লাগামহীন হয়ে যাবে। সারা দেশে অসহনীয় পেশিশক্তি গড়ে উঠবে। দেশব্যাপী চাঁদাবাজির মহোৎসব চলবে। সবচেয়ে বড় যে আশঙ্কা দেখা দেবে তাহলো রাষ্ট্র কোনো না কোনো পরাশক্তির কাজে জিম্মি হয়ে যাবে। তাই জনবান্ধব দেশপ্রেমিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও লক্ষ্য আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য এবং সেই লক্ষ্যে তিনি আগাচ্ছেন। দেশের বৃহত্তম বিরোধী শক্তি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তথা বিএনপিরও মূল লক্ষ্য সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন যেখানে জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যে তার নিজের ভোট পছন্দের প্রার্থীকে নির্ভয়ে দিতে পারে। তবে তাদের কাক্সিক্ষত নির্বাচনের বড় অন্তরায় তারা মনে করে সরকারের কর্মকাণ্ড। বিএনপি মনে করে, সরকার তাদের স্বার্থের কারণে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে আগ্রহী নয়। বিএনপির কাছে এর যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই তারা চলমান সরকার ও আগত সরকারের মধ্যে একটি বিরতি দাবি করে। অর্থাৎ চলমান সরকার তাদের মেয়াদ পূর্ণ করে একটি নিরপেক্ষ অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। অতঃপর নিরপেক্ষ অস্থায়ী সরকার স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা নিয়ে বিদায় নেবে। কিন্তু সরকার কোনো অবস্থাতেই বিএনপির এই প্রত্যাশার প্রতি কোনো মনোযোগ দিচ্ছে না। আবার রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে অকার্যকর করে বিএনপির প্রত্যাশাপূরণ করার তাদের সাংগঠনিক ও নেতৃত্বের দক্ষতাও প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। বিরোধী দল তথা বিএনপির সামনে সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন। কিন্তু তাদের প্রত্যাশিত নির্বাচনের সবচেয়ে বড় বাধা বর্তমান সরকার, সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও তাবৎ প্রশাসন। এত বড় প্রতিবন্ধকতা দূর করতে না পারলে নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি তাদের কাক্সিক্ষত ফলাফল ঘরে তুলতে পারবে না বলে তাদের মনে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা। তার ওপর রয়েছে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়। খালেদা জিয়ার মুক্তিকে মাথায় রেখে ২০১৮ সালে নেতৃত্বহীনভাবে বিএনপি নির্বাচনে গিয়েছিল। সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রচণ্ড মোহভঙ্গ হয়েছে। এবার তাই খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখে বিএনপির পক্ষে নির্বাচনে যাওয়া আরেকটি চরম ঝুঁকি নেওয়া যা তারা নিতে চাচ্ছে না। কাজেই আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করতে হলে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সবার আগে ফয়সালা করে নিতেই হবে। আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলে বিএনপিকে তার বর্তমান অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ সরে যেতে হবে। বিএনপি তথা বিরোধী দলের এখন তাদের আন্দোলন এক দফায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিরোধী দল তথা বিএনপি নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তি থেকে সরে এসে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনে নেমেছে। এই অক্টোবর মাসের মধ্যেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে সব বিরোধী দল বদ্ধপরিকর। কিন্তু চরম বাস্তবতা হলো সরকারকে পতন করানোর মতো শক্তি, সাহস, বল বা জনসমর্থন কোনোটাই তাদের নেই। জাতির চরম দুর্ভাগ্য যে, বিরোধী দল তথা বিএনপি তাদের ক্ষমতা ও শক্তি সম্বন্ধে কোনো বাস্তব ধারণাও রাখে না। বিরোধী দলগুলো সরকারের পাতানো এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রণে সমাবেশ, পদযাত্রা ইত্যাদি বিভিন্ন নামে আনন্দ ফুর্তি ও পিকনিক করে বেড়াচ্ছে। আর প্রতিদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকছে কোনো দৈব-দুর্বিপাক নেমে আসে কি না। অনেকেই পছন্দ নাও করতে পারেন; তবে এটি চরম বাস্তবতা যে, অক্টোবরে সরকারের পদত্যাগ করার কোনো কারণ বা ঘটনা ঘটবে না বা ঘটার কোনো কারণও নেই। আমাদের সামনে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা, স্বস্তি ও আস্থা ফিরিয়ে আনার কোনো রাস্তা নেই। এর বাইরে হাঁটতে গেলে হয়তো সাময়িক কিছুটা সময়ের জন্য সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। কিন্তু সময়ের প্রবাহে কাচের পাত্রের মতো এই সাময়িক নিয়ন্ত্রণ ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। বর্তমানে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া কর্মসূচি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাঁর প্রশাসনকে প্রস্তুত করছেন। বিএনপি বা বিরোধী দল নয়, এমনকী আওয়ামী লীগের একটি অংশসহ বৃহত্তর জনগণ প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করছেন। সবাই জানে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করান না; কিন্তু তিনি দেশের সবচেয়ে বড় নিয়ামকশক্তি। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার কেন্দ্র, তাই রাজনীতি বা নির্বাচন তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। সবাই এমনকী খোদ বিরোধী দলের লোকেরাও প্রধানমন্ত্রীর মন মেজাজের ওপর লক্ষ্য রেখে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সবাই প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকেন। তাই বলা যায়, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন বর্তমান সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন যথা সময় হোক, অতএব নির্দ্বিধায় বলা যায়, নির্বাচন যথা সময়েই হবে। যথা সময়ে নির্বাচন হওয়ার জন্য রাষ্ট্রের তাবৎ শক্তি কোমর বেঁধে মাঠে নেমে যাবে। হয়তো শেষমেশ বিভিন্ন অঙ্কের হিসাব মিলাতে ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগতে মূল বিরোধী দলও নির্বাচনে চলে আসতে পারে। ফলে নির্বাচন পর্যন্ত হয়তো তেমন কোনো ঝক্কি ঝামেলা হওয়ার সুযোগ নেই এবং নির্বাচন পর্যন্ত কোনো সমস্যাও সৃষ্টি হবে না। তবে নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য না হয় তাহলে নির্বাচনের দিন থেকে যে গোলযোগ সৃষ্টি হবে তা প্রচণ্ড সংঘর্ষে রূপ নেবে। যে ব্যর্থতার দায় আমাদের হয়তো শোধ করতে হবে। যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

একটি নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হওয়া কোনো সরকার বা সরকারপ্রধানের ওপর নির্ভর করে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনের ওপর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নির্ভর করে না। জেলা পর্যায়ের ডিসি-এসপি থেকে আইজিপি বা মন্ত্রিপরিষদের সচিবসহ কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারে না। এমনকী সেনাবাহিনীর পক্ষেও তা সম্ভব নয়। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন শুধু নিশ্চিত করতে পারে প্রতি উপজেলার ২০ থেকে ৩০ জন পুলিশ সসস্য- যাদের একমাত্র নেতা সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা যাকে বলা হয় ওসি। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে গ্রেফতার করার ক্ষমতা আছে শুধু পুলিশের। মাঠপর্যায়ের পুলিশ এই ক্ষমতা যথেচ্ছচারভাবে ব্যবহার করে আসছে এবং যার ব্যবহার নির্বাচনের সময় কয়েক শতগুণ বেড়ে যায়। নির্বাচনের সময় থানার ওসি যাকে নির্বাচিত করার ইচ্ছা পোষণ করবে সে-ই নির্বাচিত হতে পারবেন। নির্বাচনের সময় থানার পুলিশ তিন ভাবে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে। প্রথমে সন্ত্রাসী ধরার নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গণ গ্রেফতার করে যারা নির্বাচন পর্যন্ত জামিন পায় না। এই গ্রেফতারের সময় বিশাল অঙ্কের একটি বাণিজ্য হয় এবং প্রচুর টাকা দিয়ে গ্রেফতার এড়াতে হয়। দ্বিতীয় বাণিজ্য শুরু হয় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সরকারি প্রার্থীর লোকদের সঙ্গে বিরোধী প্রার্থীর লোকদের সংঘর্ষ বাধিয়ে দিয়ে। তার পর এই সংঘর্ষকে পুঁজি করে মামলা এবং মামলাকে পুঁজি করে অসংখ্য নামে-বেনামে মামলা দিয়ে তাদের ধাওয়া, এলাকা ছাড়া, গ্রেফতার ও গ্রেফতার বাণিজ্য শুরু করে। তৃতীয় বাণিজ্য হলো, বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন ও তাদের কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না এ রকম নিশ্চয়তা দিয়ে সরকারি দলের ছাড়া বাকি সব প্রার্থীর কাছ থেকে অনেক বড় অঙ্ক হাতিয়ে নেওয়া হয়। তবে হেরে যাওয়া প্রার্থীর টাকা নির্বাচনের পরে ফেরত দিয়ে দেয়। এই বাণিজ্যে কোথাও কোথাও সরকারি প্রার্থীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। যার জ্বলন্ত প্রমাণ গাজীপুরের সিটি করপোরেশনের পর পর দুটি নির্বাচন। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে সবার আগে নির্বাচন থেকে থানা পুলিশের কার্যক্রম দূরে রাখতে হবে।

তফসিল ঘোষণার দিন থেকেই থানা পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে রাখতে হবে এবং সেই সঙ্গে নির্বাচনের সব কার্যক্রম থেকে বাদ দিতে হবে। নির্বাচনের সময় সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন সব ধরনের গ্রেফতার বা আটক বন্ধ রাখতে হবে। যদি কোনো নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী বা প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটলে উভয় প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে দিতে হবে। প্রয়োজনে ওই আসনের নির্বাচন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে হবে। নির্বাচনে থানা পুলিশের জায়গায় জেলার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, আনসার-ভিডিপি, বিজিবি ও প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকেও নিয়োজিত করা যেতে পারে। তবে আবারও বলছি, থানা পুলিশকে নির্বাচনে নিয়োজিত করলে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা কঠিন হয়ে পড়বে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় এবারের নির্বাচনে ওসিদের দর অনেক গুণ বেড়ে যাবে। নির্বাচনে বড় খরচই হবে ওসি ম্যানেজ করা এবং যারা করতে পারবে তারা শতভাগ পাস! সাধু সাবধান!

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য

সর্বশেষ খবর