শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিএনপির ‘অক্টোবর বিপ্লব’ সম্ভব হবে কি

মহিউদ্দিন খান মোহন

বিএনপির ‘অক্টোবর বিপ্লব’ সম্ভব হবে কি

পৃথিবীর ইতিহাসে অক্টোবর মাসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এ মাসে বিশ্বরাজনীতির বড় ধরনের বাঁক পরিবর্তন হয়েছিল গত শতাব্দীতে। বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল ১৯১৭ সালের অক্টোবরে। ওই বছর ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবরের সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নেয় ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের নেতৃত্বাধীন বলশেভিক পার্টি। যদিও ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার শ্রমিক শ্রেণি জার সরকার উৎখাতে আন্দোলন শুরু করেছিল, তবে তা চূড়ান্ত পরিণতি পায় অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে। চূড়ান্ত বিপ্লবের শুরু ২৫ অক্টোবর হলেও ৩১ অক্টোবরকে পরবর্তীকালে বিপ্লববার্ষিকী হিসেবে পালন করা হতো। এর নামকরণ হয়েছিল ‘অক্টোবর বিপ্লববার্ষিকী’। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ সোভিয়েত রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ঘটা করেই দিবসটি পালিত হতো। এমনকি আমাদের দেশের সোভিয়েতপন্থি বাম দলগুলো অক্টোবর বিপ্লববার্ষিকী আড়ম্বরের সঙ্গেই উদযাপন করত। এখন আর তেমনটি হয় না। ‘সেই রামও নেই সেই অযোধ্যাও নেই’-এর মতো সোভিয়েত ইউনিয়নও নেই, অক্টোবর বিপ্লবের সেই মহিমাকীর্তনের কোরাসও আর শোনা যায় না। ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গণচীন। এদিন কমরেড মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে দীর্ঘ সশস্ত্র যুদ্ধের পর চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতা দখল করে এবং রাজধানী বেইজিংয়ের (তৎকালীন পিকিং) তিয়েনআনমেন স্কয়ারে বিপ্লব সফল হওয়া এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন তিনি। বিশ্ব রাষ্ট্রব্যবস্থায় ঐতিহাসিক বাঁক পরিবর্তনের জন্য অক্টোবর মাসের এ দুটি দিন স্মরণীয় হিসেবেই বিবেচিত।

বিএনপির সামনে পথ দুটি। এক. আন্দোলন সফল করে কাক্সিক্ষত নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ। দুই. আন্দোলন সফল না হলে ‘বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি’ বলে ঘোষণা দেওয়া। এ দুইয়ের মাঝখানে আর কোনো অপশন আছে বলে মনে হয় না

ইতিহাস চর্চা কিংবা আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা আমার এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য নয়। সে সক্ষমতাও আমার খুব একটা নেই। আন্তর্জাতিক রাজনীতির মহাসমুদ্রে আমি বালুকাবেলায় পড়ে থাকা এক ধূলিকণা। সুতরাং ওই দুঃসাহস দেখানোর কথা চিন্তাও করতে পারি না। ক্ষুদ্র জ্ঞানগরিমা নিয়ে দেশি রাজনীতির বিষয়ে মাঝেমধ্যে পর্যালোচনা করার ধৃষ্টতা অবশ্য দেখাতে কসুর করি না। আর সেটা করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই অনেক সময় খেই হারিয়ে ফেলি। বলতে দ্বিধা নেই, জাতীয় রাজনীতির উপসাগরেও থই পাই না অনেক সময়। দক্ষ ডুবুরির মতো তলদেশে গিয়ে মণিকাঞ্চন তুলে আনার সাহস পাই না। তাই যতটা সম্ভব ডুবসাঁতার দিয়ে হাতড়ে বেড়াই যদি কিছু পাওয়া যায়। এ মুহূর্তে আমার মগজে একটা চিন্তা বেশ জেঁকে বসেছে। তা হলো, বিএনপি কি আরেকটি ‘অক্টোবর বিপ্লব’ সংঘটিত করতে চাচ্ছে? অন্তত পত্রপত্রিকার প্রতিবেদন এবং দলটির নেতাদের কথাবার্তায় সে রকমই মনে হচ্ছে। পত্রিকার প্রতিবেদনগুলোয় বলা হচ্ছে, আন্দোলনরত বিএনপি তাদের এক দফা দাবি আদায়ের জন্য আসছে অক্টোবরকে লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে। ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনের একটি বিশেষ প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বিএনপির টার্গেট অক্টোবর’। তাতে বলা হয়েছে, সরকার পতনের এক দফা দাবি বাস্তবায়নে চলতি মাস থেকেই বিএনপি লাগাতার কর্মসূচিতে যাচ্ছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বৃহত্তর জেলাগুলোয় রোডমার্চ ও সমাবেশ করবে দলটি। এরপর অক্টোবরের শুরু থেকেই লাগাতার কর্মসূচি দেবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার পতনের চলমান আন্দোলনের সফল পরিণতি চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়কেই ‘এক দফা’ বাস্তবায়নের টার্গেট করেছে দলটি। অক্টোবরের শুরু থেকেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘেরাওসহ লাগাতার কর্মসূচি আসতে পারে। ১২ সেপ্টেম্বরের বাংলাদেশ প্রতিদিন জানায়, সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের ঢাকামুখী করতে পাঁচ বিভাগে ১৬ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর তারুণ্যের রোডমার্চ করবে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। ইতোমধ্যে সে কর্মসূচি পালন শুরুও হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বরের বাংলাদেশ প্রতিদিনের ‘নেতা-কর্মীদের ঢাকামুখী করবে বিএনপি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের ঢাকামুখী করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। সেই লক্ষ্যে ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় সমাবেশসহ গণসংযোগ ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে দলটি। আগামী মাসকে টার্গেট করেই সব কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তারা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই টানা কর্মসূচি শুরু করবে বিএনপি। এ নিয়ে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশন, সচিবালয় থেকে শুরু করে গণভবনসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘেরাও কর্মসূচি থাকতে পারে। এর বাইরে লাগাতার হরতাল, অবরোধ, গণ অবস্থানসহ সর্বশেষ অসহযোগ কর্মসূচিরও আলোচনা হয়েছে। তবে সব কর্মসূচি চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। তাঁর সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা মোতাবেক আন্দোলন পরিচালিত হবে।অন্যদিকে অক্টোবর কেন্দ্র করে সরকারও ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘ডেটলাইন অক্টোবর’। তাতে বলা হয়েছে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এ তিন মাসকে কঠিন চোখে দেখছে সরকার। নির্বাচনের আগে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীদের নানা পরিকল্পনা ভাবিয়ে তুলেছে সরকারের নীতিনির্ধারকদের। একাধিক সংস্থার প্রতিবেদনে সেসব পরিকল্পনার কথা উঠে এসেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিন লিখেছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অক্টোবরকে টার্গেট করে আন্দোলনরত দলগুলোর পরিকল্পনার বিপরীতে তা মোকাবিলার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা জেলা থেকে উপজেলা পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে ইতোমধ্যে পৌঁছানো হয়েছে। পাশাপাশি সরকার অক্টোবরকে উন্নয়নের মাইলফলক উদ্বোধনের মাস হিসেবেও স্থির করেছে। ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিন ‘উন্নয়নের চমকের অক্টোবর’ শীর্ষক প্রতিবেদনে লিখেছে, অক্টোবর মাসে দেশের উন্নয়নের দুয়ার খুলে যাচ্ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বেশ কয়েকটি মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বারোদ্ঘাটন করা হবে এ মাসে। এসবের মধ্যে রয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল, কর্ণফুলী নদীতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল মেট্রোরেল, আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেললাইন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একাংশ উদ্বোধন ইত্যাদি। বিরোধী দলের টার্গেট এ মাসে এসব বড় বড় উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনের পেছনে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য যে রয়েছে তা না বললেও চলে। এর দ্বারা সরকার এক ঢিলে দুই পাখি মারার চিন্তাভাবনা করছে। এক. সরকার উন্নয়নে তার ব্যাপক সাফল্যের কথা দেশবাসীকে জানাতে চায়। দুই. সেই সঙ্গে এটাও দেখাতে চায়, বিরোধী দল দেশের উন্নয়নের পক্ষে নয়। দুই পক্ষের এমন প্রস্তুতির খবরে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতির জন্য বিএনপির অক্টোবরকে টার্গেট করা এবং তার বিপরীতে সরকারের তা মোকাবিলার প্রস্তুতি- একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে কি না। যদিও বিএনপি এখনো তাদের ‘কঠোর কর্মসূচি’ পদযাত্রা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, রোডমার্চ এবং দোয়া মাহফিলের মধ্যে সীমিত রেখেছে। ১৮ সেপ্টেম্বর বিএনপি তাদের এক দফা আন্দোলনের যে ১২ দিনের প্যাকেজ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাতে তেমন নতুনত্ব নেই। ওই সব কর্মসূচি শক্তিশালী একটি সরকারকে চাপে ফেলার জন্য যথেষ্ট কি না সে প্রশ্নও রয়েছে। তা ছাড়া একই ধরনের কর্মসূচি দলটি গত কয়েক বছরে বহুবার পালন করেছে। কিন্তু তা থেকে কোনো ফলোদয় হয়নি। দেশব্যাপী রোডমার্চের যে কর্মসূচি দলটি পালন করছে তার উদ্দেশ্য যদি হয় ব্যাপক জনসাধারণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা, তাহলে প্রশ্ন- ইতোমধ্যে তা কতটুকু সম্ভব হয়েছে? বিএনপি প্রতিনিয়ত বলে চলেছে, তাদের আন্দোলনে দেশের বেশির ভাগ মানুষের সমর্থন রয়েছে, তারা জেগে উঠেছে এবং সরকারের পতন ঘটানোর জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শুধু তাই নয়, অচিরেই জনগণ গণ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকারের পতন ঘটাবে- এমন আশাবাদও বিএনপি নেতৃত্ব ব্যক্ত করে চলেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের প্রশ্ন- একটি আন্দোলন গণ আন্দোলন কিংবা গণ অভ্যুত্থানের পর্যায়ে নিয়ে যেতে যে ধরনের জনসম্পৃক্ততা দরকার বিএনপি এখনো তা ঘটাতে পেরেছে কি না। এটা ঠিক, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে গত ডিসেম্বর থেকে তাদের কর্মসূচিগুলোয় জনসমাগম বেশি হচ্ছে। কিন্তু সেখানে সাধারণ মানুষের সংখ্যা কত? পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সরকারের আপাত সহনশীল আচরণের কারণে একরকম ভীতিহীন পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় নেতা-কর্মীরাবেশি সংখ্যায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। সরকার কঠোর হলে রাজপথে তাদের উপস্থিতি কতটা থাকবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অবশ্য এটা অস্বীকার করা যাবে না, দ্রব্যমূল্যের লাগামছাড়া ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা, শাসক দলের কর্মী-ক্যাডারদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অর্থ পাচার, শাসক দলের এমপি-নেতাদের একাংশের দুর্নীতি ইত্যাদি কারণে জনসাধারণের একটি বড় অংশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ। রাস্তাঘাটে পথ চলতে কিংবা হাটে-বাজারে লোকজনের সঙ্গে কথা বললে এ ক্ষুব্ধতার উত্তাপের আঁচ পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন, জন অসন্তোষের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আগামী নির্বাচনে পড়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ক্ষুব্ধ জনগোষ্ঠী বিএনপির আহ্বানে সরকারের পতন ঘটাতে রাজপথে নেমে আসার লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির হাতে সময় অত্যন্ত কম। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন হয়তো নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করবে। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশে নির্বাচনী হাওয়া বেশ জোরেশোরে বইতে শুরু করবে। সুতরাং বলা যায়, বিএনপির হাতে রয়েছে অক্টোবর; যেটাকে তারা টার্গেট করেছে। অন্যদিকে সরকারও তার পরিকল্পনামতো এগোচ্ছে। অনেকেই মনে করেন, অক্টোবরে যদি বিএনপি লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের চরম বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। কেননা তারা ইতোমধ্যে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার শপথ নিয়ে বসে আছে।

আন্দোলন সফল না হলে তাদের অবস্থা হতে পারে ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’। এদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা মরহুম ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার প্রতিষ্ঠিত দল ‘তৃণমূল বিএনপি’র নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন বিএনপির দুই সাবেক নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার। রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, মূলত নির্বাচনে বিএনপির শূন্যস্থান পূরণের জন্যই তাদের মাঠে নামানো হয়েছে। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে ইতঃপূর্বে দল কর্তৃক অবমূল্যায়িত, বঞ্চিত, বহিষ্কৃত এবং নির্বাচনে আগ্রহী অনেক নেতাই নবগঠিত এ দলটিতে সম্পৃক্ত হতে পারেন। সে রকম ঘটলে তা বিএনপির রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক অস্তিত্বের জন্য নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এক দফার আন্দোলন নিয়ে বিএনপি এখন যে পর্যায়ে উপনীত হয়েছে, তাতে তাদের পিছিয়ে আসার সুযোগ কম। বিএনপির সামনে পথ দুটি। এক. আন্দোলন সফল করে সরকারের পতন ঘটিয়ে কাক্সিক্ষত নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ। দুই. আন্দোলন সফল না হলে ‘বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি’ বলে ঘোষণা দেওয়া। এ দুইয়ের মাঝখানে আর কোনো অপশন আছে বলে মনে হয় না।

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি-বিশ্লেষক

সর্বশেষ খবর