রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শান্তিতে নোবেল

ইরানের বীর নারীকে অভিনন্দন

ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি ২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেছেন। ইরানের নারীসমাজ তথা সাধারণ মানুষকে শাসক গোষ্ঠীর ধর্মীয় কূপমণ্ডূকতার হাত থেকে রক্ষার জন্য আপসহীন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন এই মানবাধিকারকর্মী। জেল শুধু নয়, ১৫৪টি বেত্রাঘাতের শাস্তিও পেতে হয়েছে তাঁকে। তার পরও আপস করেননি। কারাবন্দি অধিকারকর্মী ও তাঁদের পরিবারকে সহায়তার অপরাধে ইরানের শাসক গোষ্ঠীর রোষানলে পড়েন নার্গিস। ২০১১ সালে গ্রেফতার হন তিনি। দুই বছর পর মুক্তি পেয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। ইরানে কথায় কথায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার যে মধ্যযুগীয় বর্বরতা রয়েছে তার বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন তিনি। ফলে ২০১৫ সালে তাঁকে আবারও কারাগারে যেতে হয়। তবে জেলে ভরেও পরাস্ত করা যায়নি এই সাহসী নারীকে। জেলে থেকেই রাজনৈতিক বন্দিদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন, নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন নার্গিস। গত বছর মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে যে আন্দোলন গড়ে ওঠে, জেলে থেকেই তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন তিনি। এজন্য জেলে নার্গিসের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া শুধু নয়, নানা ধরনের নির্যাতনের সম্মুখীনও হন। সে অবস্থায়ও অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন নার্গিস। কারাগার থেকেই গণমাধ্যমে লেখা পাঠিয়ে শাসকগোষ্ঠীর চেহারা ফাঁস করে দেন। নোবেল কমিটি বলেছে, ইরানের মানবাধিকার, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য সাহসী লড়াইয়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁকে এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে। ১৯৭২ সালের ২১ এপ্রিল ইরানের জানজানে জন্ম নেন এই মহীয়সী নারী। সে দেশের আরেক নোবেলজয়ী নারী শিরিন এবাদির নেতৃত্বাধীন ডিফেন্ডারস অব হিউম্যান রাইটস সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি। বীর নারী নার্গিস মোহাম্মদির নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভে আমাদের অভিনন্দন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর