বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আত্মহত্যার প্রবণতা

সামাজিক বিচ্ছিন্নতা দূর করতে হবে

সামাজিক অস্থিরতা দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাকে উসকে দিচ্ছে। এটি নিছক অভিযোগ নয়। খোদ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর দেশে আত্মহত্যায় মারা যাচ্ছে ১৩ হাজার মানুষ। এ হিসাবে গড়ে দৈনিক মারা যায় ৩৫ জন। বেশ কিছু গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বলা হয়েছে, যারা আত্মহত্যা করছে তারা বয়সে কিশোর ও তরুণ এবং এদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই শিক্ষার্থী। এই তালিকায় আরও আছে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ। পারিবারিক কলহ, অভিমান, ঋণগ্রস্ত মানুষ, বেকার যুবক, প্রেমঘটিত কারণ, যৌন নির্যাতন এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে মানুষ আত্মহত্যা করছে। আত্মহত্যার হিড়িক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে লাইভে এসেও বেশ কজন আত্মহত্যা করেছেন, যে ঘটনা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা-পরবর্তী পৃথিবীতে শিশু থেকে বয়স্ক এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আগের চেয়ে বেশি মানসিক রোগে আক্রান্ত। এদের কেউ চিকিৎসা নিচ্ছে তো কেউ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ তখনই আত্মহত্যা করে যখন সে মনে করে তার আর বাঁচার আর কোনো জায়গা নেই। একজন যখন দেখেন তিনি একা হয়ে গেছেন, জীবনের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না এবং তার সংগ্রামের যে ধারাবাহিকতা তা আর সে নিতে পারছে না তখনই তিনি আত্মহত্যা করেন। সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে এখন মানুষের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে সে কারণে আত্মহত্যার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ যখনই বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে এবং অন্য মানুষের সঙ্গে তার বন্ধন কমতে থাকে তখনই তার পক্ষে আত্মহত্যা করা সহজ হয়ে ওঠে। আত্মহত্যার প্রবণতা রোধে পারিবারিক ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটাতে হবে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়া মানুষের জন্য শোভনীয় নয়, এই চেতনায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর