বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জনবিস্ফোরণের ঝুঁকি

সরকারকে সচেতন হতে হবে

জনবিস্ফোরণের ঝুঁকি বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার গত চার দশকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও বিশ্বের যেসব দেশের জনসংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। সন্দেহ নেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এখন অনেক দেশের কাছে ঈর্ষণীয়। তারপরও সত্যি হলো ১৭ কোটি মানুষের এ দেশটি এখনো উন্নয়নের কাক্সিক্ষত সোপানে পৌঁছতে পারেনি। এ সত্যের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে দায়ী করা হয়। বাস্তবতার খাতিরে স্বীকার করতেই হবে, জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের সবচেয়ে বড় সমস্যা সম্ভবত জনসংখ্যা বিস্ফোরণ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। স্বল্প আয়তনের ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে মাত্র ৫২ বছরে জনসংখ্যা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্জিত সাফল্যের সুফল সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা অনুযায়ী ভোগ করতে পারছে না। অস্তিত্বের স্বার্থে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা জাতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলেও ধর্মান্ধতা, অসচেতনতা এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সহজপ্রাপ্যতার অভাব এ ক্ষেত্রে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে জন্মশাসনের উপকরণের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সমাজের গরিব মানুষের জন্য এর ব্যবহার অসম্ভব করে ফেলছে। সরকারের পক্ষ থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহে ঘাটতি এবং বেসরকারি পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এর ফলে অনাকাক্সিক্ষত গর্ভধারণের সংখ্যা বেড়েই চলছে। জনবিস্ফোরণের সমূহবিপদের মুখে পতিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ গরিব, গরিবি সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যাও বিপুল। ক্রয়ক্ষমতা না থাকায় তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী কেনার সামর্থ্য রাখে না। এ অবস্থায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। অন্য যে কোনো খাতে অর্থ ব্যয়ের চেয়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ খাতে অর্থ ব্যয় দেশ ও জাতির জন্য বেশি কল্যাণ নিশ্চিত করবে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং তার সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। এর কোনো অন্যথা কাম্য নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর