শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিউমার্কেটের জলাবদ্ধতা

কর্তাব্যক্তিরা কুম্ভকর্ণের ঘুমে

জলাবদ্ধতা দেশের সব নগর এলাকার নাগরিকদের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে শত শত কোটি টাকার তুঘলকি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের সঙ্গে জড়িত রথী-মহারথীদের পকেট তাতে স্ফীত হচ্ছে ঠিকই কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। এর কারণ প্রতিটি প্রকল্প গ্রহণের পেছনে থাকে সমস্যা সমাধানের বদলে নিজেরা লাভবান হওয়ার মনোভাব। সাধারণ মানুষ প্রকল্পের সুফল ভোগ করবে কি করবে না তা গ্রাহ্যে আনা হয় না। সমন্বয়হীন কর্মকাণ্ডে শুধু অশ্বডিম্ব প্রসবই নিশ্চিত হয়। রাজধানীর অতি গুরুত্বপূর্ণ নিউমার্কেট এলাকা জলাবদ্ধতার শিকার তিন সপ্তাহ ধরে। এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য পিলখানার ভিতর দিয়ে দুটি লাইন বুড়িগঙ্গায় পড়েছিল, সে লাইনগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে দেখা দিয়েছে সংকট। গত ২১ সেপ্টেম্বর ভারী বর্ষণ হলে নিউমার্কেট ও পিলখানায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। যদিও গত জুলাইয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি আয়োজিত আন্তসংস্থার সমন্বয় সভায় পানি নিষ্কাশন লাইন বন্ধ হওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। তারপরও সমাধানের কোনো পথ বের করেনি সংস্থাটি। স্মর্তব্য, পিলখানার ভিতর দিয়ে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের একটি বৃহৎ অবকাঠামো ছিল। ২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডির পর থেকে অনেক মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাইফেলস স্কয়ার থেকে সীমান্ত স্কয়ার দিয়ে ধানমন্ডি খালের সঙ্গে সংযোগ ছিল। নায়েম রোড দিয়ে নর্দমার যে অবকাঠামো ছিল সেটা পিলখানার ভিতর দিয়ে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই দুটি মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি বাড়লেই সীমান্ত মার্কেট তলিয়ে যায়। নায়েম রোড সামান্য বৃষ্টি বা সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য পানিতেই তলিয়ে যায়। এই তলিয়ে যাওয়ার কারণ পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া। তিন মাস আগে ১০ জুলাই ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আন্তসমন্বয় বৈঠকে কীভাবে সমস্যার সমাধান হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা, বিজিবি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিকল্প নিষ্কাশন লাইনের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেই এক সপ্তাহ তিন মাসেও শেষ হয়নি। সমস্যার সমাধানে কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। ২১ সেপ্টেম্বরের ভারী বর্ষণের পর তিন সপ্তাহ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা পানির নিচে থাকলেও কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙছে না। মনে হচ্ছে এলাকাবাসীর জন্য তাদের কোনো দায় নেই। দুর্ভাগ্য একেই বলে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর