সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সড়ক ও ফুটপাত

ভাড়া দেওয়ার নৈরাজ্য বন্ধ হোক

বাংলাদেশকে বলা হয় সব সম্ভবের দেশ। অভিধাটি ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুভাবেই প্রযোজ্য। দুনিয়ার সব দেশের মতো বাংলাদেশেও সড়ক তৈরি হয়েছে যানবাহন চলাচলের জন্য। সড়কের পাশে ফুটপাত তৈরি হয়েছে নগরবাসীর হাঁটার পথ হিসেবে। কিন্তু সে সড়ক ও ফুটপাতে চালু করা হচ্ছে দোকানপাট। রাজধানী ঢাকার সব সড়ক ও ফুটপাত যেন ক্রমান্বয়ে বাজারে পরিণত হচ্ছে! প্রতিদিনই রাস্তার নতুন নতুন জায়গা দখল করে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। বসানো হচ্ছে অস্থায়ী দোকান। তোলা হচ্ছে ভাড়া। এসব দোকান থেকে বছরে ভাড়া উঠছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা, যার কানাকড়িও জমা পড়ছে না সরকারের কোষাগারে। নেতা নামধারী রাজনৈতিক টাউটদের নামে এই টাকা তুলছে লাইনম্যান হিসেবে নিযুক্ত কর্মীবাহিনী। চাঁদাবাজির বড় উৎস হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে দুই সিটি করপোরেশন কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কথিত অভিযানেও দখলমুক্ত হয়নি সড়ক ও ফুটপাত। কাজে আসেনি হকারদের পুনর্বাসনে হলিডে মার্কেট করার উদ্যোগও। উল্টো প্রতিনিয়ত সড়কে হকার বাড়ছে।

ফুটপাতে দোকান বসিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করায় মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে। সড়কের পাশে দোকান বসায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ছে যানজট। ফুটপাত দিয়ে স্বস্তিতে হাঁটতে পারছেন না নগরবাসী। ২০১৬ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য স্টেট অব সিটিজ-২০১৬ : ট্রাফিক কনজেশন ইন ঢাকা সিটি গভর্ন্যান্স পারসপেক্টিভ শিরোনামে এক গবেষণায় বলা হয়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে বছরে ১ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়, যা ছিল ওই সময়ে দুই সিটি করপোরেশনের মোট বাজেটের চেয়ে বেশি। প্রতিদিন চাঁদা আদায় হতো ৬০ কোটি টাকার বেশি। ওই গবেষণায় ঢাকায় তখন মোট হকারের সংখ্যা বলা হয় ৩ লাখ। আর প্রতি হকারের কাছ থেকে গড়ে প্রতিদিন চাঁদা আদায় হতো ১৯২ টাকা। বর্তমানে হকারদের বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য বলছে, ঢাকা শহরে হকার আছে সাড়ে ৩ লাখ। প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া বা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে অস্থায়ী দোকান থেকে। এর একাংশ যাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কিছু অসৎ সদস্যের পকেটে। রাজধানীকে মানুষের বাসযোগ্য করে তুলতে এবং যানজটের অবসানে এ নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর