বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অপ্রতিরোধ্য হুন্ডি

ওদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

হুন্ডির লাগাম পরানো কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যর্থতা দেশের অর্থনীতিতে বিসংবাদ ডেকে আনছে। ডলার সংকটের ঘেরাটোপে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সক্ষমতাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। হুন্ডির থাবা থামাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোয় পরিণত হওয়ায় কোনো কাজে আসছে না। ডলারের দাম বাড়ায় প্রবাসীরা হুন্ডির ওপরই ভরসা করছে। এমনকি ব্যাংকে ডলার সংকট থাকায় ব্যবসায়ীরাও হুন্ডিতে লেনদেন করছে। প্রবাসী বা বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত অনাবাসী বাংলাদেশি, ফ্রিল্যান্সার ও ব্যবসায়ীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধভাবে দেশে টাকা নিয়ে আসছে। আমদানির ক্ষেত্রেও হুন্ডিতে লেনদেন বেড়েছে। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ানো যাচ্ছে না। হুন্ডি খেয়ে ফেলছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বিদেশগামী শ্রমিক বাড়লেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে তুলনামূলক কম। হুন্ডিতে রেমিট্যান্স বেশি আসায় ওইসব ডলার চলে যায় কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে। এতে কার্ব মার্কেটে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলারের দাম এখন ১২০ টাকা। যদিও ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিপরীতে প্রবাসীরা প্রণোদনাসহ সর্বোচ্চ ১১২ টাকা ২৪ পয়সা পাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে ডলার বাজার সংকটে পড়ে। বৈদেশিক বাণিজ্যে ডলার পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, বাইরে থেকেও ডলার সংগ্রহের জন্য ব্যাংক মরিয়া হয়ে দর বাড়াতে থাকে। এতে ১২০ টাকায় পৌঁছে যায় ডলারের দর। দেশের ভোগ্যপণ্যের এক বড় অংশ আমদানিনির্ভর। ডলার সংকটে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে ব্যাপকহারে। নির্বাচন যখন ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তখন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে; যা থামাতে হুন্ডির থাবা থামানো সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর