শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অশনিসংকেত

প্রবাস আয় গিলে খাচ্ছে হুন্ডি

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস রেমিট্যান্স আয়। সে আয় এখন চলে যাচ্ছে হুন্ডিবাজদের পকেটে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ১০ লাখ মানুষ কাজ নিয়ে বিদেশে গেলেও গত ৪১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে গত মাস সেপ্টেম্বরে। জনশক্তি রপ্তানি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য বাংলাদেশ থেকে কাজ নিয়ে মানুষের বিদেশ যাওয়া শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। আর চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ কাজ করতে বিদেশে গেছেন। কিন্তু এর বিপরীতে অর্থ আসছে সবচেয়ে কম। হুন্ডিতে লাগাম পরানো কিছুতেই সম্ভব না হওয়ায় এ ব্যর্থতা দেশের অর্থনীতির জন্য সমূহ সংকট তৈরি করছে। ডলার সংকটের ঘেরাটোপে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সক্ষমতাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। হুন্ডির থাবা থামাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা কাজে লাগছে না। ডলারের দাম বাড়ায় প্রবাসীরা হুন্ডির ওপরই ভরসা করছে। এমনকি ব্যাংকে ডলার সংকট থাকায় ব্যবসায়ীরাও হুন্ডিতে লেনদেন করছেন। প্রবাসী বা বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত অনাবাসি বাংলাদেশি, ফ্রিল্যান্সার ও ব্যবসায়ীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধভাবে দেশে টাকা নিয়ে আসছেন। হুন্ডি খেয়ে ফেলছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বিদেশগামী শ্রমিক বাড়লেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে তুলনামূলক কম। হুন্ডিতে রেমিট্যান্স বেশি আসায় ওইসব ডলার চলে যায় কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে। এতে কার্ব মার্কেটে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে ডলার বাজার সংকটে পড়ে। বৈদেশিক বাণিজ্যে ডলার পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, বাইরে থেকেও ডলার সংগ্রহের জন্য ব্যাংক মরিয়া হয়ে দর বাড়াতে থাকে। এতে ১২০ টাকায় পৌঁছে যায় ডলারের দর। ডলার সংকটে প্রতিটি আমদানি নির্ভর নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ব্যাপকহারে। নির্বাচন যখন ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তখন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর