রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নকল-ভেজাল

ওদের আইনের আওতায় আনুন

নকল-ভেজালের বিড়ম্বনা দেশের ১৭ কোটি মানুষের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাদ্যে ভেজাল অহরহই ঘটছে এবং যারা বর্বর এ অপকর্মে জড়িত তারা এগুলোকে কোনো অন্যায় বলে মনে করে না। খাদ্যপণ্যের বাইরে নকল-ভেজালের দৌরাত্ম্যও কম নয়। মানুষ বিদেশি প্রসাধনী কেনে বেশি দাম দিয়ে, মানসম্মত, স্বাস্থ্যসম্মত প্রসাধনী ব্যবহারের আশায়। কিন্তু বাজারে যে বিদেশি প্রসাধনী পাওয়া যায় তার সিংহভাগই নকল। দেশি প্রসাধনীও যে নকল হয় না বলা যাবে না। এমনকি ওষুধ কিনতে গিয়েও প্রতারণার শিকার হতে হয়। ভেজাল পণ্যে যেহেতু সয়লাব বাজার, সেহেতু মানহীন খাবার নিয়ে সবার মাঝে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে। পণ্যের মান নিশ্চিত করতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের জন্য বঙ্গবাজার মোড়ে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার। দেড় কোটির বেশি অধিবাসী অধ্যুষিত রাজধানীতে খাদ্যের মান পরীক্ষা করতে এ ল্যাবের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দম ফেলারও ফুরসত পাওয়ার কথা নয়। অথচ বাজারে ভেজাল তথা মানহীন খাবারে সয়লাব সত্ত্বেও ওই ল্যাবে নেই কোনো কর্মব্যস্ততা। অলস সময় পার করতে দেখা যায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। পরীক্ষাগারে ৭০টি খাদ্য ও পানীয়ের নমুনা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা আছে। এককথায় ঢাকাবাসীর নির্ভেজাল খাদ্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব এ প্রতিষ্ঠানের; কিন্তু ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর এ ল্যাবের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। তাজ্জবের বিষয় হলো-বছরের অর্ধেক সময় খাদ্য পরিদর্শকরা মশা মারার কাজেই ব্যস্ত থাকেন। কারণ মে বা জুন মাস থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। সিটি করপোরেশনের মশক কর্মী সংকট থাকায় এ খাদ্য পরিদর্শকদের কাজে লাগায় সংস্থা দুটি। আর বাকি অর্ধেক সময় নামমাত্র খাদ্য নমুনা সংগ্রহ করেন তারা। ফলে নকল- ভেজাল মানহীন খাদ্যপণ্যে বাজার ভরে গেলেও তা দেখার কেউ নেই। সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিতে মাঝে মাঝে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ভেজাল রোধ করা না অন্য কিছু তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মানহীন খাদ্য ও নকল-ভেজালকারীদের আইনের আওতায় আনতে সরকার ও দুই সিটি করপোরেশন সক্রিয় হবে এমনটিই দেখতে চায় দেশবাসী। এটি তাদের অধিকারও বটে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর