শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যুদ্ধ নয় শান্তি

বিশ্ববিবেককে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রাসেলসে আয়োজিত গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাশিয়া-ইউক্রেন ও হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। জগৎজুড়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসান ঘটানোরও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভিকটিমের কী দুর্দশা হয় তা তার জানা। আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হলিডে ভ্রমণে বেলজিয়াম আসেন। এখানে বসে জানতে পারেন মিলিটারি ক্যু হয়েছে বাংলাদেশে। এতে তার মা, বাবা, তিন ভাই, ভাবিসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার ছোট ভাইয়ের বয়স ছিল ১০। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। তিনি এবং তার মাসহ ছয়জন সদস্যকে বন্দিখানায় আটক রাখা হয়। সেখানে না ছিল আসবাবপত্র, না ছিল খাবারের সরঞ্জাম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনো খাবার দেওয়া হয়নি। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভিকটিমদের দুর্দশা তার জানা বলেই তিনি বিশ্বনেতাদের যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছেন। যদি কোনো সমস্যা থাকে তা সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। মিয়ানমারের এক মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। সে দেশের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমারের সঙ্গে কোনো যুদ্ধে না জড়িয়ে আলাপ-আলোচনায় বসা হয়েছে। বিদ্যমান সংঘাতের জন্য কাউকে দোষারোপ না করে প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধে ব্যয়িত অর্থ নারী-শিশুর কল্যাণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যবহারের আহ্বান জানান। সংকট মোকাবিলায় আরও ভালো প্রস্তুতি এবং পারস্পরিক সম্মান পুনরুদ্ধারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। গাজা ও ইউক্রেনে যে যুদ্ধ চলছে সে যুদ্ধসহ বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐকমত্যের আহ্বান জানান। যুদ্ধ ও হানাহানি মানবজাতির অস্তিত্বকে যখন গভীর সংকটে ফেলছে তখন ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রীর উদাত্ত আহ্বান বিশ্ব বিবেককে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অনুপ্রাণিত করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর