বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাল্যবিয়ে

আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে

বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে এশিয়ার শিরোপা বাংলাদেশের শিরস্ত্রাণে। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অগ্রসর অনেক দেশের কাছে ঈর্ষণীয় হলেও সে ক্ষেত্রে যে বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোর অস্তিত্ব রয়েছে বাল্যবিয়েতে শিরোপার ঘটনা তারই প্রমাণ। তালেবান প্রভাবিত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চেয়েও বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের দাপট বেশি। বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি ২০২৩-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাল্যবিয়ের হারের দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম ও এশিয়ায় প্রথম। দীর্ঘদিন ধরে দেশে বাল্যবিয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে দরিদ্রতা ও সামাজিক নিরাপত্তাহীনতাকে দায়ী করা হলেও সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপের তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। এতে বলা হচ্ছে, সচ্ছল-অসচ্ছল উভয় পরিবারের অভিভাবকরাই ‘উপযুক্ত পাত্র’ পেলে নিজের অপ্রাপ্ত বয়স্ক কন্যার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই বাল্যবিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। আর অভিভাবকের ৫০ শতাংশই মনে করছেন, মেয়েদের বয়স ১৮ হওয়ার আগেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া উচিত। বাল্যবিয়ে নিয়ে ৫ অক্টোবর রাজধানীতে ‘বার্ন টু বি আ ব্রাইড, চাইল্ড ম্যারেজ : ট্রেন্ডস অ্যান্ড কজেম’ শীর্ষক একটি জরিপ প্রকাশ করে ব্র্যাকের সোশ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড লিগ্যাল প্রটেকশন কর্মসূচি। সেখানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিলে দেশের ২৭ জেলার ২ হাজার ৮০ গ্রামের ৫০ হাজার পরিবারের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়। এতে দেখা যায়, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার প্রায় ৪৫ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ৭ শতাংশ ১৫ বছরের কম বয়সী। আর ৭০ শতাংশ কিশোরী বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। বাল্যবিয়ের পেছনে নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি ধর্মান্ধতার নোংরা দৈত্যও ভূমিকা পালন করছে। বাল্যবিয়ে বন্ধে নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা ধর্মের অপব্যাখ্যায় লিপ্ত তাদের সামাল দিতে হবে। বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও জোরদার করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর