বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মামলাজট

চাই দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ

মামলাজট দেশের ১৭ কোটি মানুষের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জট নিরসনে একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কাক্সিক্ষত সুফল অর্জিত হচ্ছে না। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করা-সংক্রান্ত মাসদার হোসেন বনাম সরকার মামলার যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে ১২ দফা নির্দেশনা দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে ৩০১ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা নিয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে দেশে প্রায় ২ হাজার জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে পৃথককরণের সময় দেশের সব আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ৭০ হাজার। অন্যদিকে গত ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৪২ লাখ ৮ হাজার ৯৮৭টি। এ ১৬ বছরে মামলাজট বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণের বেশি। সোজা কথায়, বিচারকের সংখ্যা বিপুলভাবে বাড়লেও মামলাজট হ্রাসে কাক্সিক্ষত ভূমিকা পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর ভাষ্য, বিচার বিভাগের সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করছে সরকার। মামলাজট কমানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে তা কমানোর জন্য নিরলস চেষ্টা চলছে। কিছু কার্যকর পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। বিচারে গতি আনতে প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিচারক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এজলাস সংকট নিরসনে এরই মধ্যে সব জেলায় নতুন আদালত ভবন করা হয়েছে। সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর সুফল খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে। অভিজ্ঞজনদের ধারণা মামলাজট নিরসনে পর্যাপ্ত বিচারক যেমন দরকার তেমনি দরকার আইনজীবীদের ইতিবাচক ভূমিকা। অভিযোগ রয়েছে, আইনজীবীরা অনেক সময় নিজেদের স্বার্থে মামলা ঝুলিয়ে রাখেন। মামলাজট কমাতে যেসব মামলা আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সময় নির্দিষ্টকরণের কথাও ভাবা যেতে পারে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর