বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পারস্পরিক আস্থা ও সুবন্ধুত্বের উদাহরণ হয়ে উঠেছে দেড় দশক ধরে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের মিত্রবাহিনীর সদস্যরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন পাকিস্তানি দখলদারদের বিরুদ্ধে। এ কঠিন লড়াইয়ে শহীদ হয়েছেন দুই দেশের হাজার হাজার যোদ্ধা। বাংলাদেশের মাটিকে রঞ্জিত করে দুই দেশের সৈনিকদের রক্তের যে রাখিবন্ধন গড়ে ওঠে তা আকাশছোঁয়া উচ্চতায় উঠেছে গত দেড় দশকে। বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারতের সহযোগিতা এবং বন্ধুত্বের নতুন স্মারক রচিত হলো ১ নভেম্বর আখাউড়া-আগরতলা ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তসীমান্ত রেল সংযোগ উদ্বোধনের মাধ্যমে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বোতাম টিপে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। বাংলাদেশের সরকারপ্রধান গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন। একই অনুষ্ঠানে দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ভারতের সহায়তায় নির্মিত আরও দুটি উন্নয়ন প্রকল্প খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নকে বাংলাদেশ সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে দেশের উন্নতি হয়, আমরা সেটাই প্রমাণ করেছি। বিশ্বের জন্য এটা একটা দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশের জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর যৌথ উদ্বোধন আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে অনন্য সাধারণ বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতার বহিঃপ্রকাশ। বিগত বছরগুলোয় আমরা দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছি। যার মধ্যে রয়েছে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজীকরণ ছাড়াও অনেক কিছু। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের উন্নয়নে বৃহত্তম অংশীদার হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানান। সবকিছু বদল করা গেলেও প্রতিবেশী বদল করা যায় না এটি এক বাস্তবতা। বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশ সৎ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তা দুই জাতির কল্যাণই শুধু নয়, অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস।