সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন দেশের জন্য মঙ্গল

মেজর আখতার (অব.)

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন দেশের জন্য মঙ্গল

চেয়ারে, পদে বা ক্ষমতায় থাকলে অনেকেই অধস্তনদের কথা শুনতে চান না। ইতিহাস সাক্ষী দেয়, যারা শোনেন, বহুজনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন তারা সাধারণত লাভবান হন। তাই বলা হয় সম্মিলিত চিন্তা থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনেক বেশি কার্যকরী হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি অবদান রাখে। ক্ষমতাসীনদের আরেকটি সমস্যা হলো তাদের সামনে কেউ সত্য কথা বলতে চায় না। ফলে কর্তা যা বলে সবাই তার কীর্তন করে বা কোরাস গায়। বর্তমানে সরকারের কোনো রাজনৈতিক সংকট আপাতত নেই। দুর্বল বিরোধী দল বা দলগুলো সরকারের সামনে এখনো পর্যন্ত কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। বিরোধী দলগুলো অতিসম্প্রতি যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে তা শিগগিরই একঘেয়েমি হয়ে যাবে। মানুষ বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনে আস্তে আস্তে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। যার পূর্ণ সুযোগ নিতে যাচ্ছে সরকার।

সরকারের মূল সংকট যা তার অস্তিত্ব নিয়ে টান দেবে তা হতে পারে নির্বাচনের পরে। নির্বাচন যথাসময়েই হয়ে যাবে, যা বিরোধী দল সম্মিলিতভাবেও রোধ করতে পারবে না। কিন্তু এতে সরকারের ঢেকুর তোলার কিছু থাকবে না। হয়তো নির্বাচনটি আইনের দৃষ্টিতে সুষ্ঠু হবে, কিন্তু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। এখন দেখা যাক যে নির্বাচনটি হতে যাচ্ছে তা আইনের দৃষ্টিতে সুষ্ঠু কীভাবে হবে? নির্বাচনে প্রতি আসনে ন্যূনতম কতজন প্রার্থী হতে হবে তার কোনো সুস্পষ্ট বিধান আইনে বা সংবিধানে নেই। একজন প্রার্থী হলেও নির্বাচন আইনের চোখে বৈধ হবে। তার মানে ৩০০ আসনেও যদি সরকারি দলের বা মদদের প্রতি আসনে একজন করে মোট ৩০০ আসনে ৩০০ জন প্রার্থী থাকে তাহলে ওই নির্বাচন সুষ্ঠু ও বৈধ হবে। তার সুষ্ঠুতা ও বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। আরেকটু পরিষ্কার উদাহরণ দিই। যদি বিএনপি নির্বাচন না করে তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিপক্ষে কোনো প্রার্থী থাকবে না। তখন সেই নির্বাচনকে কী বলা হবে? ওই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বা বৈধ হয়নি কি বলা যাবে?

এখন দেখি অবাধ নির্বাচন কাকে বলে? সাধারণত অবাধ নির্বাচন বলতে ওই নির্বাচনকে বোঝায় যে নির্বাচনে যে কোনো যোগ্য প্রার্থী তার ইচ্ছা, মনমতো ও বিনা বাধায় স্বাচ্ছন্দ্যে প্রার্থী হতে পারে এবং সেখানে জনগণ বা বৈধ ভোটাররা তাদের ইচ্ছামতো যাকে খুশি বা তার নির্দিষ্ট প্রার্থীকে বিনা বাধায় ভোট দিতে পারে। যেমন অবাধ নির্বাচনে জেলখানায় বা বিদেশে থেকেও একজন প্রার্থী হতে পারে। এখন যদি কাউকে তার ইচ্ছা ও স্বাধীন মতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া হয় বা এমন কোনো বৈধ বা অবৈধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয় তাহলে কি সেই নির্বাচনকে অবাধ বলা যাবে? আবার নির্বাচন হলো কিন্তু একাধিক প্রার্থী না থাকার কারণে জনগণ বা ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করার সুযোগ পেল না, তাহলে কি সেই নির্বাচনকে অবাধ বলা যাবে? যে কোনো প্রার্থীর জেলখানায় আটক থাকা অবস্থায় যে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার রয়েছে। এখন যদি জেলখানায় আটক কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে বাধা সৃষ্টি করে তাহলে কি সেই নির্বাচনকে অবাধ বলা যাবে?

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আইনের কোনো বাধ্যবাধকতা নয়, তবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে সেই নির্বাচন কোনো কারণে জনগণ মেনে না-ও নিতে পারে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। কিন্তু কোনো সংসদ নির্বাচনে দেশের বৃহত্তর দলগুলো বিশেষ করে আমাদের দেশে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি অংশগ্রহণ না করে তাহলে সেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে সেই নির্বাচনে তখন প্রার্থী সংকট দেখা দিতে পারে, যা অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে।

যে কোনো দেশের নির্বাচন সাধারণত দেশের জনগণের সার্বভৌমত্বের বিষয়। কিন্তু এবারের নির্বাচনে বিদেশি বিভিন্ন উৎসাহী বা আগ্রহী পক্ষ খুবই দৃশ্যমান। যদিও তাদের ভোট দেওয়ার কোনো অধিকার নেই। কিন্তু আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অংশীদারিমূলক হবে কি না তা খুবই গুরুত্ব ও কঠোরতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে ও আগাম হুঁশিয়ার দিয়ে রাখছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিদেশের একটি মহল আসন্ন নির্বাচনে তাদের সরাসরি ভূমিকা রাখতে বেশ তৎপর। ইতোমধ্যে দেশের ঘরোয়া রাজনীতিতে তাদের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। একটি রাষ্ট্র তো বহু আগে থেকেই সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ চাপ সৃষ্টি করা শুরু করেছে। তারা দেশের সবচেয়ে চৌকশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। তারপর আবার দেশের সবার ওপরে নেতিবাচক ভিসানীতি প্রয়োগ করার প্রকাশ্য হুমকি প্রতিদিনই দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোকে তাদের আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য উসকে দিচ্ছে। মুখে আহ্বান জানাচ্ছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে। আবার সরকারকে উৎসাহিত করছে সহিংসতা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু কে বা কারা সহিংসতা করছে তাদের চিহ্নিত না করেই উভয় পক্ষকে সহিংস না হতে উপদেশ বিতরণ করছে। কিন্তু কোনো একটি পক্ষ সহিংস হলো আরেকটি পক্ষ সেই সহিংসতা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজনীতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। নভেম্বরের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। তফসিল ঘোষণার মুহূর্ত থেকে প্রশাসনে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৈধভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। বিদেশিদের ভাবসাবে মনে হচ্ছে তফসিল ঘোষণার পর সরকারকে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক বাধা সৃষ্টি হতে পারে। সরকার এখন যত সহজে ধমকি-ধমকি দিচ্ছে তাতে কিছুটা লাগাম টানতে হতে পারে। কিন্তু নির্বাচন কার্যক্রমে বিদেশিরা কোনো হস্তক্ষেপ করবে না তা অনেকটাই নিশ্চিত। বিদেশিরা নির্বাচন পর্যন্ত যে অপেক্ষা করবে এরকম আভাসই তারা তাদের বক্তব্যে দিচ্ছে। বিএনপির নেতৃত্বে সরকারবিরোধীরা বিচ্ছিন্নভাবে সরকারবিরোধী কার্যক্রমও জোরেশোরে চালিয়ে দিয়েছে। বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে মরণপণ চূড়ান্ত আন্দোলনে নেমে গেছে। জামায়াতসহ অন্য সব বিরোধী দল তাদের নিজস্ব কর্মসূচি না দিয়ে তারাও বিএনপির সঙ্গে আছে, তোতা পাখির শেখানো বুলি আওড়ে যাচ্ছে। বিএনপি তার আন্দোলনের যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে সেখান থেকে মনে হয় কোনো অবস্থাতেই পেছনে হটবে না। মর্দুর এক কথা- মরব কিন্তু পিছু হটব না। বিএনপির কঠোর ও একমুখী সিদ্ধান্তকে অনেকে আত্মঘাতী বলে মনে করে। যাই হোক সেটি বিএনপির একান্ত দলীয় বিষয়, যেখানে আমি কিছু বলতে গেলে উল্টো আমাকেই সবাই গালাগাল করবে। বিএনপির সামনে এখন চ্যালেঞ্জ হলো সময়কে বিবেচনায় না নিয়ে ২৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ থেকে পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে যে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করেছে তা নভেম্বরের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত টেনে নেওয়ার মতো সক্ষমতা কতটুকু তার ওপর। ইসি বা সরকারের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কোনো কারণ নেই। নির্বাচন করানোর জন্য ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ যথেষ্ট। ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ সালের আগে যে কোনো দিন নির্বাচন করাতে হলে ইসি ২৭ নভেম্বর ২০২৩ সোমবার বা তার আগে ঘোষণা দিলেই হবে। যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে যাবে না তা প্রায় নিশ্চিত, তাই একপেশে নির্বাচনের জন্য লম্বা সময়ের কোনো প্রয়োজন পড়বে না। কাজেই সরকার হেসেখেলে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে খেলতে পারবে। কিন্তু চ্যালেঞ্জ হলো বিএনপির জন্য তারা ততদিন আন্দোলন ধরে রাখার সক্ষমতা কতটুকু থাকবে। মনে হয় বিএনপি সেই প্রস্তুতি নিয়েই নেমেছে। তবে ততদিনে বিএনপির প্রথম ও দ্বিতীয় সারির নেতারা প্রকাশ্য রাজনীতিতে মাঠে থাকতে না পারে তা সরকার শতভাগ নিশ্চিত করে রেখেছে। এ খেলায় কে জিতে কে হারে তা জানার জন্য দুর্বলচিত্তের লোকেরা তফসিল ঘোষণার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কিন্তু যারা মাঠের সক্রিয় খেলোয়াড় তারা জানে এ খেলার প্রকৃত রূপ ১০ নভেম্বরের আগেই দৃশ্যমান ও স্পষ্ট হয়ে যাবে।

নির্বাচন যথাসময়েই হয়ে যাবে। প্রয়োজন ছিল আন্দোলন নির্বাচনের দিন থেকে শুরু করা। কারণ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করাতে পারবে। কিন্তু অবাধ নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই করাতে পারবে না। নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা না থাকলে কোনো প্রকৃত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে যাবে না। ফলে জনগণ ভোট দিতেও যাবে না। তখন খুবই স্বাভাবিকভাবে জনরোষ সৃষ্টি হতে পারে। জনরোষ খুবই সহজে জনবিস্ফোরণে রূপান্তর সম্ভব, যদি সঠিক নেতৃত্ব থাকে। কিন্তু চরম বাস্তবতা হলো বিরোধী দলে এমন কোনো সর্বজন গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের প্রচন্ড অভাব। তার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক চৌকশ, স্মার্ট, দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য। সর্বোপরি শেখ হাসিনা মুজিবকন্যা এবং দেশের সব মুক্তিযোদ্ধার কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে এ দেশের সবচেয়ে বেশি ত্যাগ, যার ধারেকাছেও কেউ নেই। নির্বাচন ছাড়াও মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার রয়েছে দেশ শাসন করার পূর্ণ অধিকার। শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। কাজেই শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্য কোনো নেতার তুলনাই হয় না। তারপরও আমি চাইব দেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক এবং সেই নির্বাচনে বিএনপিসহ আমরা সবাই অংশগ্রহণ করি। দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি সবাই মিলে নিশ্চিত করি। আমি আওয়ামী লীগকে খালি মাঠে একা ছড়ি ঘোরাতে দিতে রাজি না। হারলেও আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে লড়তে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে আছেন সেখানে যতদিন খুশি থাকুক কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমরা লড়তে চাই।

বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বিনীতভাবে বলতে চাই, চূড়ান্তভাবে হেরে যাওয়ার চেয়ে জয়ের সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখাও একটি বিশাল পদক্ষেপ। ভয়ানক প্রতিকূল অবস্থায় লড়তে গেলে যেখানে হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা আনুপাতিক হারে জয়ের চেয়ে বেশি, সেখানে প্রতিকূল অবস্থা পরিবর্তনের জন্য অযথা অপেক্ষা না করে সাময়িক বিরতি বা প্রতিপক্ষের সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি কোনো সমঝোতায় চলে যাওয়াও অনেক বেশি কৌশলী পদক্ষেপ। যত চেষ্টা করা হোক না কেন নির্বাচন ঠেকানো যাবে না। আওয়ামী লীগও ১৯৯৬ সালে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন জামায়াত ও অন্য সব দল নিয়ে ঠেকাতে পারেনি। কিন্তু নির্বাচন-উত্তর আন্দোলনের মুখে বিএনপিকে পিছু হটতে হয়েছিল।

একই ফর্মুলায় বিএনপি ও জামায়াত ২০১৪ সালের নির্বাচনে যায়নি এবং আন্দোলন করেও সফল হয়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ধোঁকা খেয়েছে। নির্বাচন ঠেকাতে গেলে সহিংস আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু অতি অপ্রিয় হলো বর্তমানে সহিংস আন্দোলন করার পরিবেশ ও পরিস্থিতি নেই। সহিংস আন্দোলন করতে গেলে আরও অধিক সমস্যায় পড়ে যাওয়ার সমূহ-সম্ভাবনা রয়েছে। সহিংস আন্দোলনে বিদেশি সহযোগিতা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক দুরূহ হবে, বরং তারা বিরূপ হয়ে যেতে পারে। জাতিসংঘসহ বিদেশি শক্তিরা চায় বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন এবং পাশাপাশি নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করুক। এবার যদি সরকার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না করতে পারে তাহলে বিদেশিরা সেই নির্বাচনের ফলাফল যে মেনে নেবে না তা নিশ্চিত। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন না করলে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। সেক্ষেত্রে একতরফা নির্বাচন বৈধতা পেয়ে যাবে।

বিএনপি যদি জাতিসংঘকে মধ্যস্থতায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সার্বিক সহযোগিতা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা নিতে পারে তাহলে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত রেখে নির্বাচনে যাওয়া বিএনপির জন্য একটি ভালো কৌশল হবে।

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির জয়ের সুযোগ যেমন থাকবে তেমনি সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে নির্বাচনের দিন থেকেই আন্দোলন আবার শুরু হয়ে যাবে। কাজেই বিএনপির হারানোর কিছু নেই।

জামায়াত বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে বাধা দেবে। কারণ জামায়াত জানে সরকার তাদের কোনো প্রার্থীকে নির্বাচন করতে দেবে না। এমনকি বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধেও জামায়াতের প্রার্থীকে নির্বাচনের মাঠে সরকার থাকতে দেবে না। বিএনপি কেন এবং কী স্বার্থে জামায়াতের বোঝা বহন করবে? জামায়াত ক্যাডারভিত্তিক একটি রাজনৈতিক দল, যাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তারা আগামীতে হয় বিএনপিতে বিলীন হয়ে যাবে অথবা ধীরে ধীরে বিএনপিকে গিলে খাবে।

আমার সুস্পষ্ট সুপারিশ থাকবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে নিয়ে সরকারের সঙ্গে নিঃশর্ত সংলাপে যাওয়া উচিত। সংলাপের দায়িত্ব দিতে হবে জেলে থাকা নেতাদের, যাতে সরকার তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। আমরা বিশ্বাস করি, ব্যক্তির চেয়ে দল ও দলের চেয়ে দেশ বড়। সিদ্ধান্ত চটজলদি দিতে না পারলে সুযোগ আবারও হাতছাড়া হয়ে যাবে। জয় বিএনপির হতেই হবে।

                লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য

সর্বশেষ খবর