সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অফুরন্ত সম্ভাবনা

আস্থার পরিবেশ চাই দক্ষিণ এশিয়ায়

দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষের বাস। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতিতে এ অঞ্চলের অবদান আহামরি কিছু নয়। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উন্নয়নের কাক্সিক্ষত শিখরে ওঠার সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না আস্থার অভাবে। এ মহা সত্যটি আবারও তুলে ধরা হয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ১৪তম দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক সম্মেলনে। প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান সভাপতির বক্তব্যে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অবাধ আন্তসীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারিত হলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার বিশাল সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এ অঞ্চলের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য পারস্পরিক আস্থাহীনতার কারণে কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্যের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও অশুল্ক বাধা। এসব বাধা দূর করে এক দেশ অন্য দেশে বিনিয়োগ এবং সীমান্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করতে পারলে আসিয়ানের মতো এ অঞ্চলও শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে। এক দেশের পরিবহন যাতে অবাধে অন্য দেশে যেতে পারে, এক দেশের শ্রমিক যাতে অন্য দেশে কাজ করার সুযোগ পায় এবং অবাধ সীমান্ত নিশ্চিত হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আসিয়ান বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট গড়ে তোলা যায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্য নিশ্চিত করতে ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে। সম্মেলনে বক্তারা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির যে কথা বলেছেন তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান অনুদার মনোভাব যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির পথে প্রধান অন্তরায় তা দিবালোকের মতো সত্য। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ১৯০ কোটি মানুষের স্বার্থে এ বিষয়ে উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিতে হবে। এটি সম্ভব হলে দক্ষিণ এশিয়া হয়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্র। দারিদ্র্যকেও জাদুঘরে পাঠানো সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর