সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আলাদিনের চেরাগ

বিআরটিএ নিয়ে তদন্ত হোক

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ কর্মদক্ষতার এক অনন্য রেকর্ড স্থাপন করেছে। মাত্র ছয় ঘণ্টায় প্রায় ১২০০ যানবাহনের ফিটনেস সনদ দেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে তারা। গত সোমবার বিআরটিএর অতিমানবরা এই নজির গড়ে মাত্র দুই মিনিটের কম সময়ে একেকটি গাড়ির ফিটনেস সনদ দেওয়ার অসামান্য যোগ্যতা দেখালেও তাদের এই কর্মতৎপরতায় বিপাকে পড়েছেন বিআরটিএর শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে অফিস সহকারী পর্যন্ত সবাই। কারণ দুর্নীতির আখড়া বলে চিহ্নিত এ দফতরটির জারিজুরি ফাঁস হয়ে পড়েছে তাদের ফিটনেস সংক্রান্ত কর্মকান্ডে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ওইদিন ইকুরিয়া ও পূর্বাচল বিআরটিএ কার্যালয়ে যেসব গাড়ির ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়েছে তার ১০ শতাংশ গাড়িও সরাসরি উপস্থিত হয়নি। দালাল চক্রের যোগসাজশে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও আর্থিক সুবিধা নিয়ে মাত্র ছয় ঘণ্টায় ১২০০ গাড়ির ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়েছে। দুই বিআরটিএ কার্যালয়ে সেদিন ছয়জন মোটরযান পরিদর্শক এসব ফিটনেস সনদ দিয়েছেন। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র এক কর্মদিবসে দুই বিআরটিএতে প্রায় ১২০০ যানবাহনের ফিটনেস সনদ দেওয়া অস্বাভাবিক। সঠিক পদ্ধতিতে কোনোভাবেই এত কম সময় ও জনবল দিয়ে বিপুলসংখ্যক গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট ইস্যু করা সম্ভব নয়। তবে বিআরটিএর প্রতিটি কার্যালয়ে যে পদ্ধতিতে গাড়ির ফিটনেস দেওয়া হয় তাতে ওই সময়ে তারা ১২ হাজার গাড়ির ফিটনেস সনদ দিলেও তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বলা হয়, গাড়িচালকের লাইসেন্স পেতে হলে যোগ্যতায় কোনো কাজ হয় না। বিআরটিএ অফিসের লোকজনের পকেট ভারী করা আসল যোগ্যতা বলে বিবেচিত হয়। ফিটনেসের ক্ষেত্রে অচল গাড়ির পক্ষেও সনদ পাওয়া যায় বিআরটিএ সংশ্লিষ্টদের শর্ত পূরণ করলে। এ দফতরে যারা চাকরি করেন তারা যে আলাদিনের চেরাগের অধিকারী এটি একটি ওপেন সিক্রেট। হয়তো ফিটনেস সনদ দানের ক্ষেত্রেও সে চেরাগের হাত ছিল। এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর