সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পে অশান্তি

শ্রমিক মালিক দুই পক্ষের সুমতি কাম্য

পোশাকশিল্পে নৈরাজ্য বিদেশে বাজার হারানোর আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। পোশাক আমদানিকারকরা বাংলাদেশের বদলে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া শ্রীলঙ্কা, ভারত ও চীনের দিকে ঝুঁকতে পারেন এমন আশঙ্কায় ভুগছেন এ শিল্পের উদ্যোক্তারা। নৈরাজ্য চলতে থাকলে আম ও ছালা দুটিই হারানোর আশঙ্কা সৃষ্টি হবে। অর্ডার না থাকলে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে চাইলেও কারখানা চালু রাখা সম্ভব হবে না। মূল্যস্ফীতির কঠিন সময়ে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আরও বেশি মজুরি দাবিকে অযৌক্তিক বলার সুযোগ নেই। কিন্তু বাস্তবতাকে অস্বীকার করে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালালে এবং তাতে শ্রমিকদের জীবিকার উৎস গার্মেন্ট বন্ধ হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। গত শনিবার এক দিনে গাজীপুর ও সাভারের ১৩০টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ শ্রমিকদের অভিযোগ, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে। শ্রমিকদের মোবাইলে এ-সংক্রান্ত মেসেজ পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া কারখানার গেটে নোটিস টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের অনেকেই কারখানায় সকালে গিয়ে নোটিস দেখে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ যে আইন দেখিয়ে ছুটি ঘোষণা করেছে সেই আইনে কারখানা যতদিন বন্ধ থাকবে ততদিনের বেতন পাবেন না শ্রমিকরা। আশুলিয়ায় মজুরি বৃদ্ধির দাবিকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনে পোশাক কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। মামলার বাদী ক্ষতিগ্রস্ত সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ১ হাজার ৫০০। শ্রমিকরা বিক্ষোভের পাশাপাশি কারখানায় ভাঙচুরে মেতে ওঠায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধেছে। এ অবস্থার মধ্যে নাশকতা এড়াতে বেশ কিছু কারখানা তাৎক্ষণিক ছুটিও ঘোষণা করেছে। গার্মেন্ট শিল্পে নৈরাজ্য সৃষ্টির পেছনে দেশের বাইরের বিভিন্ন মহলের উসকানি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মালিক পক্ষ। আমাদের মতে, গার্মেন্টে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শ্রমিক ও মালিক দুই পক্ষকেই সুবিবেচনার পরিচয় দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর