মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইউরিয়া সার কারখানা

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতায় অবদান রাখবে

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ কৃষিজীবী। ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি। এত স্বল্প আয়তনের কোনো ভূখন্ডে এত বেশি মানুষের বসবাস নেই। তারপরও বাংলাদেশ প্রায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এটি সম্ভব হয়েছে কৃষকের নিরলস প্রচেষ্টায়। কৃষককে সময়মতো সার, বীজ, সেচের সুবিধা দেওয়ায় বাংলাদেশের কৃষক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। দেশের কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশবাসীর জন্য খাদ্য উৎপাদন করলেও তারা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় কি না তা একটি বড় মাপের প্রশ্ন। এ দেশে অতীতে সারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে কৃষককে প্রাণ হারাতে হয়েছে। আশার কথা, সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। গত রবিবার নরসিংদীর পলাশে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় সার কারখানা ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারখানাটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশে সারের ঘাটতি পূরণসহ আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। ১১০ একর জমির ওপর নির্মিত এ প্রকল্পের ব্যয় ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কারখানাটি চালু হওয়ায় দৈনিক ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ও বছরে গড়ে ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়ার সার উৎপাদন সম্ভব হবে। এ ছাড়া কারখানাটিতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে কয়েক হাজার মানুষের। খাদ্য ঘাটতি পূরণসহ দেশের কৃষি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকার ৪ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা আর জাপান ও চীনের ঠিকাদারদের যৌথ কনসোর্টিয়াম ব্যাংক অব টোকিও-মিৎসুবিশি ইউএফজে লিমিটেড ও এইচএসবিসি ব্যাংক ১০ হাজার ৯২০ কোটি টাকার ঋণ দেয়। পলাশের এই ইউরিয়া সার কারখানা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। শত শত বছর ধরে যে ভূখন্ড দুর্ভিক্ষ মঙ্গা তথা খাদ্যাভাবের দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে সে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে খাদ্যের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ।

সর্বশেষ খবর