বাঙালি সহজ-সরল জাতি এমন কথা প্রায়শই বলা হয়। তবে এ দেশে যে গরল লোকের অভাব নেই তা একটি পরীক্ষিত সত্য। এই ডিজিটাল যুগেও বদলায়নি এ দেশের একশ্রেণির লোকের মানসিকতা। তারা সারাক্ষণই ফন্দি ফিকির খোঁজে লোক ঠকানোর। বলা যেতে পারে, এমন কোনো দিক নেই যেখানে নেই প্রতারণার ফাঁদ। ডিজিটাল যুগে সংঘবদ্ধ প্রতারকদের কাছে অনায়াসে চলে যাচ্ছে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য। প্রতারকরা অন্য লোকের বায়োমেট্রিক সিম তুলে নিচ্ছে অনায়াসে। অন্যের নামে অ্যাক্টিভেট করা সিম ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধের দায় চাপছে নিরপরাধ ব্যক্তির কাঁধে। টেলিগ্রাম অ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপে এনআইডি নম্বর দিলে চলে আসছে রাষ্ট্রের কাছে সংরক্ষিত ব্যক্তির একান্ত ব্যক্তিগত সব তথ্য। ফেসবুকে ভুয়া ই-কমার্স পেজ খুলে লোভনীয় অফার দিয়ে বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে অগ্রিম টাকা নিয়ে পণ্য দিচ্ছে একশ্রেণির প্রতারক। ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে খালি করা হচ্ছে মানুষের পকেট। জিনের বাদশা সেজে বা গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিকাশ বা নগদে টাকা নিচ্ছে প্রতারক চক্র। চতুর্মুখী প্রতারণার জালে নাজেহাল মানুষ। অধিকাংশ প্রতারণায় মোবাইল নম্বর ব্যবহৃত হলেও অধরাই থাকছে অপরাধীরা। পুলিশ বলছে, অনেক অপরাধীর মোবাইল নম্বর, বিকাশ বা নগদ নম্বরের সূত্র ধরে ব্যক্তিকে আটকের পর দেখা যাচ্ছে ওই সিমটি যে তার নামে নিবন্ধিত তা তিনি জানেনই না। এমনকি যিনি মাত্র দুটি সিম কিনেছেন, তার এনআইডির বিপরীতে রয়েছে ১০টি। সম্প্রতি সিম জালিয়াত চক্রের আট সদস্যকে আটকের পর তাদের কাছে সিলিকন পেপারে সংরক্ষিত হাজার হাজার মানুষের আঙুলের ছাপ পায় গোয়েন্দা পুলিশ। সিম কেলেঙ্কারির সঙ্গে সিম বিক্রেতাদের কারসাজি জড়িত এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। প্রতারণা বন্ধে দায়িত্বশীলরা চোখ-কান খোলা রাখবেন আমরা এমনটিই দেখতে চাই।