মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গণতান্ত্রিক রাজনীতি

দুর্বৃত্তায়ন অপ্রত্যাশিত

গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সহিংস কর্মসূচির কোনো সুযোগ নেই। হরতাল-অবরোধ নিঃসন্দেহে গণতান্ত্রিক রাজনীতিরই অংশ। যা আমাদের সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইন দ্বারা স্বীকৃত। শান্তিপূর্ণভাবে অন্যের ওপর জবরদস্তি না চাপিয়ে যে কেউ সাধারণ ধর্মঘট বা হরতাল এবং অবরোধের ডাক দিতে পারেন। কিন্তু কোনোভাবেই ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারেন না। যানবাহন ও ট্রেনে আগুন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অধিকার রাখেন না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, দলবিশেষ এবং তাদের দোসরদের ডাকা হরতাল চলাকালে রাজধানী, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, রাজশাহী, ফেনী, বগুড়া, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুধু ককটেল বিস্ফোরণ কিংবা গাড়িতে আগুন নয়, যাত্রীবাহী এক্সপ্রেস ট্রেনে তারা আগুনসন্ত্রাস চালিয়েছে। দুর্বৃত্তদের থাবা থেকে বাদ যায়নি কোমলমতি শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যানুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টায় ১১টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। রাজধানীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্নই ছিল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হরতালকে সাইনবোর্ড হিসেবে নিয়ে সাধারণ মানুষের জানমালকে পুঁজি করছে দুর্বৃত্তরা। নাশকতা ঠেকাতে সর্বোচ্চটাই করে যাচ্ছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। রেলের নিরাপত্তা, রেল চলাচল স্বাভাবিক রাখা ও নাশকতা প্রতিরোধে দায়িত্ব পালন করছেন আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা। শনিবার ও রবিবার যে ১১টি যানবাহনে আগুন লাগানো হয়েছে তার মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৫টি, রাজশাহী বিভাগে ৩টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২টি ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১টি। আমরা গণতান্ত্রিক অধিকারের সুবাদে সংবিধান ও আইন দ্বারা সমর্থিত যে কোনো প্রতিবাদী কর্মসূচি পালনের অধিকারকে সম্মান জানাই। কিন্তু যারা সাংবিধানিক ও আইনি অধিকারের লঙ্ঘন ঘটিয়ে জনগণের জানমাল এমনকি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তাদের রাজনীতির টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাদের সঙ্গে এক হতে পারি না। নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে তারা সুস্থধারার রাজনীতিতে ফিরে আসবেন, সুমতির পরিচয় দেবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর