বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বছরজুড়ে ডেঙ্গু

হেমন্তের বৃষ্টি ঝুঁকি বাড়িয়েছে

হেমন্তে শহর গ্রাম সর্বত্রই শীতের আগমনি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গ্রাম এলাকায় লেপের ব্যবহারও শুরু হয়েছে ব্যাপকভাবে। বছরজুড়ে যখন রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গুর আগ্রাসন চলছে, তখন আশা করা হচ্ছিল শীত নামার সঙ্গে সঙ্গে বিদায় নেবে এ আপদ। কিন্তু হেমন্তে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গুর থাবা বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃষ্টির পানি জমে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হয়। মশা প্রায় ৪০ দিন বেঁচে থাকে। এ সময়ের মধ্যে যদি তারা পানি না পায়, তাহলে ডিম দিতে না পেরে মারা যায়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মশা এখন প্রজননের জন্য পানি পাবে। ফলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও ৪০-৫০ দিন স্থায়ী হবে। বাংলাদেশের ডেঙ্গু ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চতে পৌঁছেছে। দেশে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু চিহ্নিত হওয়ার পর ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ৮৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল আর এ বছর দুর্ভাগ্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৫৪ জনের। সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ২ হাজার জন। এটি হাসপাতালে ভর্তির পরিসংখ্যান। বাস্তবে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বৃষ্টি পুরোপুরি থেমে গেলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে। তবে দেখেশুনে মনে হচ্ছে, দেশে ডেঙ্গু এখন সারা বছরই থাকবে। যেসব পাত্রে বৃষ্টি ছাড়াও পানি জমা হয় অথবা জমিয়ে রাখা হয় সেসব পাত্রে সারা বছরই এডিস মশার প্রজনন হবে। ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে বাড়ি এবং বাড়ির আঙিনায় কোনো পানি জমা না থাকে। ডেঙ্গু এমনিতেই প্রাণঘাতী রোগ। যারা এ রোগে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হন- তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি হয়। ডেঙ্গুতে যারা আক্রান্ত হয় তাদের মধ্যে যাদের অবস্থা চরম অবনতিশীল কেবল তাদেরই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চলতি বছর জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রক্ত পরীক্ষায় যে ব্যয় হয়েছে, তার অঙ্ক বিশাল। ডেঙ্গুর কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় মশা নিধন। জনসচেতনতা গড়ে তোলাও জরুরি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর