বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আন্দোলনের ফাঁদে বিএনপি

মহিউদ্দিন খান মোহন

আন্দোলনের ফাঁদে বিএনপি

চাঁইকে বোধকরি কারও সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার পড়ে না। এটা আমাদের দেশে বহুল পরিচিত একটি বস্তু। মাছ ধরার কাজে ব্যবহারের জন্য এটি বাঁশের চটি দিয়ে তৈরি করা হয়। কোথাও কোথাও এটাকে বলে ‘দোয়ারি’। আমাদের বিক্রমপুরে অবশ্য চাঁই ছাড়াও ‘দোয়াইর’ নামে আরেকটি মাছ ধরার ফাঁদের প্রচলন আছে। আকার এবং নির্মাণ কৌশলে পার্থক্য থাকলেও কাজ করে একই। এটি এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়, এর ভিতরে মাছ একবার প্রবেশ করলে আর বের হতে পারে না।  তখন এর পেছনের দিকের ঢাকনা খুলে মাছ বের করে আনতে হয়।

রাজনীতির এ সরগরম অবস্থায় হঠাৎ কেন চাঁই নিয়ে পড়লাম, সহৃদয় পাঠকের মনে এ প্রশ্ন দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে একেবারে কারণ ছাড়া চাঁইকে পানি থেকে লেখার টেবিলে টেনে আনিনি। এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে গলদঘর্ম বিএনপিকে পর্যবেক্ষণ করে আমার কেন যেন মনে হচ্ছে দলটি ‘আন্দোলনের চাঁইয়ে’ ঢুকে পড়েছে, এখান থেকে সহজে বের হয়ে আসা দুষ্কর। দলটি একই অবস্থায় পড়েছিল ২০১৫ সালে। সবারই মনে থাকার কথা, ২০১৪ সালের ‘ভেটারবিহীন’ নির্বাচনের এক বছর পূর্তিতে ৫ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। কিন্তু সরকারের বাধার মুখে সেই সমাবেশ হতে পারেনি। এমনকি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানের তাঁর কার্যালয়ে আটকে ছিলেন। কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড সৃষ্টি করে তার গতিরোধ করেছিল। বিএনপির ওই সমাবেশকে নিয়ে সরকারের পদক্ষেপকে আমার মতো অনেকের কাছেই যৌক্তিক মনে হয়নি। বেগম জিয়া ওই সমাবেশটি করতে পারলে নিশ্চয়ই সরকারের পতন হয়ে যেত না। তারপরও সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমাবেশটি হতে দেয়নি; যা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল পরবর্তী তিন মাসব্যাপী এক অস্বস্তিকর পরিবেশ। কোনোরকম পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকা সত্ত্বেও উপস্থিত জনৈক সাংবাদিকের ‘ম্যাডাম তাহলে কি অবরোধ চলবে’- প্রশ্নের জবাবে বেগম জিয়া বলেছিলেন, ‘অবরোধ চলবে’। অথচ বিএনপি তখনো কোনো অবরোধ ডাকেনি। ওই সাংবাদিকের ‘প্রভোকেটিভ’ অর্থাৎ প্ররোচনামূলক প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া ‘অবরোধ চলবে’ বলে এক মারাত্মক রাজনৈতিক জালে জড়িয়ে ফেলেছিলেন দলকে। তার পরের ইতিহাস সবার জানা। প্রায় তিন মাস অকার্যকর কথিত অবরোধ চলার পর এক দিন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিয়ে ফিরে গেলেন নিজ বাসায়। মাঝখান থেকে পেট্রল বোমার আগুনে পুড়ে প্রাণ হারাল শতাধিক মানুষ, ধ্বংস হলো সরকারি-বেসরকারি সম্পদ। অসংখ্য মামলায় আসামি হলো দলটির লাখ লাখ নেতা-কর্মী।

সে সময় বিএনপিকে ওই ত্রিশঙ্কু অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিকে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে তিনি হরতাল-অবরোধের মতো নেতিবাচক রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে সরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। যদিও বিএনপি আজ অবধি সেই কার্যকারিতা হারানো অবরোধ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেনি। অনেকটা ‘তামাদি’ হয়ে গেছে।

রাজনীতি-সচেতন ব্যক্তিরা ২০২৩-এ এসে ২০১৫-এর প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছেন। তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, চলমান কথিত অবরোধের কোথায় কীভাবে সমাপ্তি টানবে বিএনপি। ২০১৫-তে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবার  সেরকম কোনো উদ্যোগ এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হচ্ছে না। লক্ষ্য করার বিষয় হলো- দিন দিন অবরোধ তার কার্যকারিতা হারাচ্ছে, মানুষ বিরক্ত হচ্ছে। অথচ বিএনপি নেতারা নির্বিকার। তারা দুই দিন পরপর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে যাচ্ছেন। ঘোষিত কর্মসূচি পালিত হলো কি না, জনগণ সমর্থন করল কি না, সে ব্যাপারে তাদের যেন মাথাব্যথা নেই। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নেতার মতো আত্মগোপনে থেকে একজন নেতা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করে যাচ্ছেন। জনগণ তো দূরের কথা, দলটির নেতা-কর্মীরাও এখন আর এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মবোধ করে না। কর্মীরা আছে লুকিয়ে। গ্রেফতারের ভয়ে তারা প্রকাশ্যে আসতে পারছে না। দলটির যারা সাধারণ কর্মী, তারা কেউ ছোটখাটো ব্যবসায়ী, কেউ চাকরিজীবী। গ্রেফতারের ভয়ে এরা দোকান খুলে বসতে পারছে না, চাকরিস্থলে যেতে পারছে না। কারও কারও চাকরি এরই মধ্যে চলে গেছে। কেউ কেউ গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে কষ্টকর জীবনযাপন করছে। কয়েকদিন আগে আমি আমার এলাকা বিক্রমপুরের শ্রীনগরে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বিএনপির কাউকে খুঁজে পেলাম না। একদম সুনসান নীরবতা। হরতাল-অবরোধের চিহ্নমাত্র নেই। একজন বিএনপি সমর্থকের সঙ্গে কথা হলো। জিজ্ঞেস করলাম, কী অবস্থা আন্দোলনের? বললেন, কীসের আন্দোলন, কোথায় আন্দোলন? ২৮ অক্টোবরের পর এলাকায় বিএনপির কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। আর পুলিশি অভিযান শুরু হওয়ার পর এখন আর ‘একটা পোনাও নাই’। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করলেন, যে কর্মসূচি সফল করতে পারবে না, সে কর্মসূচি এরা দেয় কেন? ভদ্রলোকের প্রশ্নের জবাব আমার কাছে নেই। কেন বিএনপি বারবার এ ধরনের হঠকারী কর্মসূচি দেয় তা আমারও বোধে আসে না। এরা কি জনগণের মনের কথা বুঝতে পারে না? জনগণের একটি বড় অংশ বিএনপিকে সমর্থন করে এটা ঠিক। কিন্তু এ ধরনের অপরিণামদর্শী কর্মসূচি যে তারা সমর্থন করে না, তার প্রমাণ তো ২০১৫ সালেই পাওয়া গেছে। তারপরও কোন আক্কেলে দলটি একই কর্মসূচির ফাঁদে পা দিল? বর্তমানে আমাদের এলাকা বিএনপি নেতা-কর্মীশূন্য। এ চিত্র শুধু আমার এলাকার নয়, সারা বাংলাদেশের। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের যাদের সঙ্গে পরিচয় আছে তাদের কাছ থেকেও একই চিত্র পাই। জেলা পর্যায়ের অনেক নেতা ফোন করেন। জিজ্ঞেস করি কোথায় আছেন? বলেন ঢাকায়। তাহলে আন্দোলন? বলেন, আগে নিজে বাঁচি, তারপর আন্দোলন। একটি দলের নেতা-কর্মীরা যখন নিজেকে বাঁচাতে তৎপর হন তখন সে দলের কর্মসূচির মাঠে মারা যাওয়া ছাড়া উপায় কী? কথায় আছে, ‘ভাবিতে উচিত ছিল প্রতিজ্ঞা যখন’। বিএনপি লাগাতার অবরোধ কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে তাদের নিজেদের শক্তি-সামর্থ্যরে হিসাব করা দরকার ছিল। জনসভার লোকসমাগম আর আন্দোলন কর্মসূচিতে কর্মীদের মাঠে থাকা এক কথা নয়।

যুদ্ধের ময়দানে কুশলী সেনানায়করা অবস্থা বুঝে কৌশল পরিবর্তন করেন। কখনো সৈন্য নিয়ে আগুয়ান হন আবার কখনো পশ্চাদপসরণ করেন। কখনোবা তলোয়ার খাপে ভরে বসেন আলোচনায়। রক্তপাত এড়াতে করেন সন্ধি। এগুলো চিরাচরিত সমরনীতিরই অংশ। রাজনীতির ক্ষেত্রেও একই ফর্র্মুলা প্রযোজ্য। একটি পয়েন্টে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জন সম্ভব না-ও হতে পারে। এ জন্য জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেছেন, একাধিক পথ খোলা রাখতে হয়, যাতে প্রয়োজনে বিকল্প পথে সমাধান খোঁজা যায়।

কিন্তু বিএনপি তাদের দাবিতে অনড়, অটল। দাবি আদায় না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। এদিকে নির্বাচনি দামামা বেজে উঠেছে। সরকারও তার অবস্থানে থেকে একচুলও না নড়ার ঘোষণা দিয়ে বসে আছে। এ অবস্থায় বিশিষ্টজনেরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলেন দুই পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসতে। এক সময় সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংলাপে বসতে তাদের আপত্তি নেই, তবে তা হতে হবে শর্তহীন। কিন্তু বিএনপি তখন এ কথাকে এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিল এই বলে যে, সরকার পদত্যাগ না করলে কোনো সংলাপ হবে না। এখন বিএনপি সংলাপের ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর চিঠি পাওয়ার পর। কিন্তু সরকার বেঁকে বসেছে। সুতরাং সংলাপের সম্ভাবনা সুদূর পরাহত বলেই মনে হচ্ছে।

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বললে এখনো বিদেশি শক্তির ওপর তাদের ভরসার বিষয়টি চাপা থাকে না। ১৯ নভেম্বরের বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনেও সে কথা তুলে ধরা হয়েছে। ‘বিএনপির চোখ বিদেশিদের দিকে’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- দলটি আন্তর্জাতিক বিশ্বের দিকে তাকিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানিয়েছে। তারা মনে করছে বর্তমান রাজনৈতিক বিরোধ মেটাতে সংলাপই একমাত্র পন্থা। প্রয়োজনে নির্বাচনের তফসিল পিছিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে সংলাপের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব। তা না হলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে দিতে সর্বশক্তি নিয়ে তারা মাঠে নামবে। হরতাল-অবরোধের পাশাপাশি ‘অসহযোগ’ কর্মসূচি দেওয়ারও কথাও ভাবছে বিএনপি। তাছাড়া খুব শিগগিরই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী একটি দেশের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ আসতে পারে বলে এখনো আশায় আছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির এসব চিন্তাভাবনা থেকে বোঝা যায় আন্দোলন এবং বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপের কুহেলিকায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে দলটি। কিন্তু হরতাল-অবরোধের যে লেজেগোবরে অবস্থা, তাতে অনুমান করা কষ্টকর নয় অসহযোগের কী অবস্থা হবে। আমার ধারণা, বিএনপির যেসব নেতা অসহযোগের কথা ভাবছেন তারা ‘অসহযোগ’ আন্দোলনের স্বরূপ সম্পর্কে পুরোপুরি অজ্ঞ। উপমহাদেশের ইতিহাসে দুটি অসহযোগ আন্দোলনে জনগণ ব্যাপক সাড়া দিয়েছিল। একটি ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ১৯২০ সালে মোহনদাশ করমচাঁদ গান্ধী আহূত ‘সত্যাগ্রহ’ ও কংগ্রেস-মুসলিম লীগের ‘অসহযোগ’, আরেকটি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকা অসহযোগ। অসহযোগ আন্দোলনের অর্থ হলো- জনগণ সরকারকে কোনো বিষয়ে সহযোগিতা করবে না। খাজনা-ট্যাক্স দেবে না, সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীরা অফিসে কাজ করবে না, শ্রমিকরা মিল-কারখানার চাকা বন্ধ করে দেবে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাবে না ইত্যাদি। বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণকে এ ধরনের কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করার সামর্থ্য কি বিএনপির আছে? রাজনীতি, আন্দোলন এসব হলো বাস্তবভিত্তিক কর্মকান্ড। শীতের রাতে লেপের নিচে শুয়ে দাদি-নানির কাছে রূপকথার গল্প শুনে নিজেকে অচিন দেশের রাজকুমার ভাবা রাজনীতি নয়। রাজনৈতিক নেতাদের বাস্তবমুখী হতে হয়, কল্পনাবিলাসী নয়।

অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগ যখন নিঃশর্ত সংলাপের কথা বলেছিল, বিএনপির তাতে সাড়া দেওয়া উচিত ছিল। তারপর সংলাপে বসে তারা চারটি দাবি উত্থাপন করতে পারত। এক. খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। দুই. বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। তিন. নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। চার. ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার আলোকে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির পক্ষ থেকে টেকনোক্র্যাট কোটায় হলেও অন্তত তিনজন মন্ত্রী করতে হবে। তারা মনে করেন, সংলাপে বসে এসব প্রস্তাব দিলে হয়তো সমাধানের একটি পথ বেরিয়ে আসতে পারত। কিন্তু নির্মম সত্য হলো- এ সময়ে বিএনপি চালিত হচ্ছে রিমোট কন্ট্রোলে।  আর এর সুইচ যার হাতে তিনি দেশের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্যক অবগত নন। ফলে অপরিণামদর্শী লাগাতার আন্দোলনের চাঁইয়ে ঢুকে পড়েছে বিএনপি। ২০১৫ সালে এমাজউদ্দীন আহমদ বিএনপিকে আন্দোলনের চাঁই থেকে উদ্ধার করেছিলেন। কিন্তু এবার কে হবেন উদ্ধারকারী?

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর