শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অ্যান্টিবায়োটিক

যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ করুন

অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার ছিল মানবকল্যাণের এক অনন্য ঘটনা। লাখ লাখ মানুষের রোগমুক্তি এবং জীবনরক্ষায় অবদান রেখেছে এটি। মানবকল্যাণের এ উপাদানটির অপব্যবহার মানুষের জন্য অকল্যাণ বয়ে আনছে। গবেষকদের মতে, অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণু বাংলাদেশে ভয়াবহ হারে বাড়ছে। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রোগীদের ক্ষেত্রে লিনেজোলিড জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের হার ৭০ শতাংশ; যা বহির্বিভাগে প্রতিরোধের হার ৮২ শতাংশ। এখানে কার্বপেনমের মতো ওষুধের প্রতিরোধী হার ৮৪ শতাংশ। ল্যাব পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রস্রাবে ওষুধ-প্রতিরোধী জীবাণু পাওয়া যায় ৭০ শতাংশ। তবে রক্তে এ হার কিছুটা কম, ১০ শতাংশ। ইনডোর, আউটডোর, আইসিইউতে এমিক্যাসিন, ফসফোমাইসিন এবং কার্বপেনমের প্রতিরোধী হার দেখা গেছে ৯০ শতাংশ। যেখানে নিউট্রোফুরানশন প্রতিরোধের হার ৭২ শতাংশ। এমনকি তৃতীয় প্রজন্মের অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পরিচিত সিফ্রোক্সোজনের প্রতিরোধী হার ৪৭ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। দেশের জেলা হাসপাতালগুলোয় রোগীদের যথেচ্ছভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করানো হয়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে। রোগীর ব্যবস্থাপত্রে অ্যান্টিবায়োটিক না দিলে যেন তাদের চিকিৎসা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে মেরোপেনেমের মতো অ্যান্টিবায়োটিক উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর আগ্রাসি বিপণনে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণুর বিস্তার ঘটছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধ করার বিকল্প নেই। অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায় এবং ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটাতে পারে সে ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিবেক বর্জিত বিপণন রোধেরও উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর