রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভূগর্ভস্থ পানির স্তর

নিম্নমুখী প্রবণতা ঠেকাতে হবে

সেচ কাজে যথেচ্ছভাবে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার, নদ-নদী, খাল-বিল ভরাট ইত্যাদি কারণে পরিবেশগত ঝুঁকিতে পড়ছে বাংলাদেশ। প্রতিদিনই নিচে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। সিলেটে আশঙ্কাজনক হারে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানযোগ্য পানির সংকট বাড়ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নলকূপ দিয়ে পানি তুলতে আগের চেয়ে অনেক বেশি গভীরে পাইপ বসাতে হচ্ছে। কোনো কোনো উপজেলায় আগে বসানো নলকূপ থেকে পানি উঠছেই না। উপজেলাগুলোর মতো সিলেট নগরীর অবস্থাও অভিন্ন। জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও যত্রতত্র গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি উত্তোলনের ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সিলেট জেলার প্রায় সবকটি উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর গত কয়েক বছরে ৩০-৪০ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারণ নলকূপ থেকে পানি উঠছে না। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারণ নলকূপের স্থলে গভীর নলকূপ স্থাপন করছে সাধারণ মানুষ। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পানির স্তর যেভাবে নিচে নামছে তা আশঙ্কাজনক। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে হলে জলবায়ু রক্ষায় সচেতন হতে হবে। বেশি করে গাছ লাগানোর পাশাপাশি নদ-নদী, খাল ও জলাশয়গুলো সংস্কার করে পানির প্রবাহ বাড়াতে হবে। পুকুর-দিঘি জলাশয়ের ভরাট বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে যাওয়ার বিপদ শুধু সিলেটের নয়, বরং সারা দেশের। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। মানুষের বসবাসের জন্য প্রতিদিনই গাছপালা কাটা হচ্ছে। বিলঝিল ভরাট করে তৈরি হচ্ছে ঘরবাড়ি বিভিন্ন স্থাপনা। দেশে কৃষিকাজের জন্য গভীর নলকূপ থেকে পানি ওঠানো হচ্ছে যথেচ্ছভাবে। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতিতে কমছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীতে দেড় কোটি মানুষের চাহিদা মেটাতে যে পানি লাগে তার অর্ধেকের বেশি ওঠানো হয় ভূগর্ভ থেকে। অস্তিত্বের স্বার্থে এ আত্মঘাতী প্রবণতা থেকে সরে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর