শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সীমান্ত সড়ক

পাল্টে দেবে পার্বত্যবাসীর জীবন

বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলার সঙ্গে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। পুরো সীমান্ত এলাকাই ছিল দুর্ভেদ্য। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ফলে প্রতিবেশী দুই দেশের বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের আনাগোনা ছিল এসব এলাকায়। দেশের নিরাপত্তার জন্য যা ঝুঁকি বলে বিবেচিত হতো। এ ঝুঁকির অবসানে বহুমুখী উদ্দেশ্য নিয়ে পার্বত্য তিন জেলার ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকার ১ হাজার ৩৬ কিলোমিটারজুড়ে সীমান্ত সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। কঠিন নির্মাণ কাজটি দেওয়া হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। এ দীর্ঘ সড়কের ৩১৭ কিলোমিটার অংশ নির্মাণ করা হচ্ছে প্রথম ধাপে। যার মধ্যে ১৭৪ কিলোমিটার নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ শেষ হবে আগামী জুনের মধ্যে। দুই লেনের ১৮ ফুট প্রশস্ত এ সড়ক ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার জীবনধারা বদলে দিয়েছে। পার্বত্যবাসীর জীবনকে করেছে স্বাচ্ছন্দ্যময়। বর্ডার রোডের কারণে উন্নয়ন চলে যাচ্ছে একেবারে তৃণমূলের কাছে। স্থানীয়রা সম্পৃক্ত হচ্ছেন আয়বর্ধক নানা কাজে। সীমান্ত সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে জনবসতি। নতুন নতুন ঘরবাড়ি। ঘরের পাশে দু-চারটি পেঁপে গাছ, রঙিন টিনের চালে গড়াগড়ি খাচ্ছে পুঁই, লাউয়ের ডগা- যা দিয়ে সারা বছরের সবজির চাহিদা মিটে যায়। টিনের চালে সোলার প্যানেল বসানো। কয়েক বছর আগেও যেটা কল্পনা করতে পারত না পাহাড়ের বাসিন্দারা। পাহাড়ের বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রেখে তৈরি হচ্ছে সীমান্ত সড়ক। এটিই দেশের সবচেয়ে উঁচু সড়ক নির্মাণের অসাধারণ কীর্তি। সর্বোচ্চ পয়েন্টে এর উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ৮০০ ফুট। এর আগে দেশের সবচেয়ে উঁচু সড়ক ছিল বান্দরবানে পাহাড়ের ওপর দিয়ে নির্মিত থানচি-আলীকদম সড়কটি। সীমান্ত সড়কের সঙ্গে পার্বত্য বিভিন্ন এলাকার মধ্যে প্রচুর সংখ্যক অভ্যন্তরীণ ‘কানেক্টিং রোড’ নির্মাণ করা হচ্ছে, যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা অবাধে যাতায়াত সুবিধা পাবেন। এ সীমান্ত সড়কের কারণে পার্বত্যাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতির বিরাট এক বিপ্লব ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনেতিক উন্নয়নেও অবদান রাখবে এ সড়ক।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর