রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভূমিকম্পে হৃদয় কম্পন

মো. আবু তালহা তারীফ

ভূমিকম্পে হৃদয় কম্পন

গতকাল মৃদু ভূকম্পনে সারা দেশ কম্পিত হয়ে উঠেছিল। মহাবিপদের সম্মুখীন হয়েছিল মানুষ। বায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিকভাবে মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে থাকাই এর কারণ। বর্তমানে এ সমস্যার কথা বললেও আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে আল্লাহতায়ালা বিশ্ববাসীকে এসব বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পৃথিবী বিপন্ন। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, তারা কি দেখে না যে, ক্রমেই আমরা তাদের জমিনকে এর বহিঃপরিসরের দিক দিয়ে সংকুচিত করছি। সুরা রাদ : ৪১। বিপদ এখানেই পরিসমাপ্ত নয়। সমুদ্রের তলদেশে বাইরের দিক প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি বেড়ে গেছে ভূমিকম্পের মতো ঘটনা। এসব সমস্যা নিয়ে সপ্তম শতাব্দীতে কেউ ভাবত না। কিন্তু পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে আগেই বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যখন মহাসমুদ্র উত্তাল করে তোলা হবে’। সুরা তাকবির : ৬। ভূমিকম্পের সময় প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে কম্পন সৃষ্টি হয়। দামি ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে ছুটে যায়। হৃদয়ে এক ধরনের ভয় সৃষ্টি হয়। মহান আল্লাহতায়ালা সর্বাধিক জ্ঞানী। তিনি তাঁর বান্দাকে সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন নিদর্শন সৃষ্টি করেন, যাতে করে তারা মহান আল্লাহর ইবাদত ও দাসত্ব করা সম্পর্কে সচেতন ও ভীত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য ছাড়া কোনো নিদর্শন পাঠাই না।’ সুরা ইসরাইল : ৫৯। ভূমিকম্প ও অন্য সব দুর্যোগ সংঘটিত হওয়ায় দেশে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ আহত কিংবা নিহত হচ্ছে। দুর্যোগ আসার কারণ হচ্ছে শিরকি কার্যকলাপ বেড়ে যাওয়া।

মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘বল! আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে কিংবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম, তিনি তোমাদের দল-উপদলে বিভক্ত করে এক দলকে আরেক দলের শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করতে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম।’ সুরা আনআম : ৬৫। আল্লামা আল কাউয়ুম (রহ.) বলেন, আল্লাহতায়ালা মাঝে মাঝে পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন, যার ফলে তখন বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। যখন ভূমিকম্প, সূর্যগ্রহণ কিংবা  ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয় তখন মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে নিজের ও দেশের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা। প্রিয় নবী (সা.) সূর্যগ্রহণ দেখলে বলতেন, ‘যদি তুমি এরকম কিছু দেখে থাক তখন দ্রুততার সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ কর। তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর।’ বুখারি।

বিপদ-আপদ সব নিজের হাতের কামাই। মহান আল্লাহ বলেন, হে মানুষ যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন তা হচ্ছে তোমাদের নিজের হাতের কামাই এবং তা সত্ত্বেও আল্লাহ তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দেন।’ সুরা শুরা-৩০।

♦ লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর