শনিবার গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল দেশের এক বড় অংশ। ভূমিকম্প আতঙ্কে তাড়াহুড়া করে উঁচু তলার ভবন থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছে ২০০-এর বেশি মানুষ। ভূমিকম্পে বেশ কিছু ভবনে ফাটল দেখা দিলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ৩৩ সেকেন্ডের ভূমিকম্পটি ঢাকাসহ অনেক এলাকায় অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। এর উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তি স্থলের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ একটা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার কাছে হওয়ায় ছোটখাটো ভূমিকম্প প্রায়ই হয় এবং হবে। তবে এখানে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা খুবই কম। তাই ভূমিকম্পে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকতে হবে। বিল্ডিং কোড মেনে ভবন করতে হবে। তাহলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু থাকবে না। ভূমিকম্প শুরু হলে আতঙ্ক ছড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে। শিক্ষার্থীরা তাড়াহুড়া করে বের হতে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও সূর্যসেন হলের পাঠকক্ষের কাচের দরজা ভেঙে যায়। আতঙ্কে সূর্যসেন হলের দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। স্মর্তব্য, বেশ পুরনো দুটি হলের পলেস্তরা প্রায়ই খসে পড়ে। সেহেতু ভূমিকম্পের মধ্যে শিক্ষার্থীরা ছিলেন আতঙ্কে। ভূমিকম্পে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানের ভূমিকম্পে ফাটল দেখা দেওয়ায় হলগুলো নির্মাণে ঠিকাদাররা শুভংকরের ফাঁকির আশ্রয় নিয়েছেন কি না সে বিষয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। ভূমিকম্পে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো ক্ষয়ক্ষতি ঘটলেও এর উৎপত্তি স্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে কোনো ক্ষয়ক্ষতি ঘটেনি। চলতি বছর শনিবারের ভূমিকম্প নিয়ে ৮টি ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল দেশের অভ্যন্তরে। ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকার যথাযথ প্রস্তুতির উদ্যোগ নেবে এমনটি প্রত্যাশিত।