শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বর ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বর ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন

ডিসেম্বর স্বাধীনতার মাস। হাজার বছরের আরাধ্য স্বাধীনতা অর্জন করেছি এই মাসে। পাকিস্তানি হানাদাররা বছরের প্রথমদিকে যেমন দিগ্বিদিকি  কাঁপিয়ে হাজার হাজার ঘর-বাড়ি, লাখো মানুষকে হত্যা করতে করতে রাজধানী ঢাকা থেকে বিস্ফোরণের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, ঠিক তেমনি ডিসেম্বরের শুরু থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারও আগে থেকে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর চাপে বা আঘাতে লেজ গুটিয়ে ঢাকার দিকে পালাচ্ছিল। তাদের সে পালানোও তেমন মসৃণ ও নিরাপদ ছিল না। আমাদের হাতে শত শত হানাদার পালিয়ে ফেরার পথে ধরা পড়েছিল। অনেক স্থানে যুদ্ধ হয়েছে। তাতে মারা পড়েছে। ৩ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর পক্ষ থেকে ঢাকায় বোমা ফেলা হয়েছিল। যাতে অনেকটাই দিশাহারা হয়ে পড়েছিল হানাদার বাহিনী। আমরা সে সময় নাগরপুর থানা দখলের জন্য প্রাণপণ লড়াই করছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনী আর কোথাও অত শক্তি প্রয়োগ করেনি। কাদেরিয়া বাহিনীর প্রায় ৩ হাজার সদস্য নাগরপুর থানার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। প্রথম ঝটিকা আক্রমণে হানাদার ঘাঁটির অর্ধেকটা আমরা দখল করে নিয়েছিলাম। হানাদাররা ঘাঁটি ছেড়ে উত্তর-পশ্চিমে পালাতেও শুরু করেছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধে হুমায়ুনের হনুমান কোম্পানি নিয়ে। হানাদাররা পালিয়ে যাওয়া শুরু করলে হুমায়ুনের হনুমান কোম্পানির যোদ্ধারা তাদের ওপর গুলিগোলা ছুড়তে থাকে। তারা মর্টার, রকেট লাঞ্চারের অনবরত গোলা ছোড়ে। মিডিয়াম মেশিনগানের গুলির সামনে দিশাহারা হয়ে আবার তারা থানা এলাকার বাংকারে ফিরে যায়। সেখান থেকে আত্মরক্ষা করতে থাকে। আক্রমণ করা হয়েছিল ৩০ নভেম্বর। ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নাগরপুর দখলে যুদ্ধ চলতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অঞ্চলে কোথাও এত দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ হয়নি। আর আমরা এত শক্তি ব্যবহার ও এত গোলাগুলি খরচ করিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনোমতেই নাগরপুর থানা দখল করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে টাঙ্গাইল থেকে নাগরপুরে অবরুদ্ধ হানাদারদের উদ্ধারে এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য নিয়ে পাকিস্তানিরা এগোতে থাকে। এলাসিনের কাছে ধলেশ্বরী নদী পার হওয়ার আগেই হানাদারদের বাধা দেওয়া হয়। নাগরপুর থানা দখল স্থগিত রেখে কাদেরিয়া বাহিনীর পুরো দল এলাসিন ঘাটে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সেখানেই প্রথম আমার সঙ্গে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে দেখা হয়। বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীর ছোট্ট একটি চিরকুট তার কাছে ছিল। যদিও কাদেরিয়া বাহিনীর বেসামরিক প্রধান আনোয়ারুল আলম শহিদ, ডা. শাহজাদা চৌধুরী, ফারুক আহমেদ ও অন্য কয়েকজনের সঙ্গে লতিফ ভাই ১০-১২ দিন আগেই ভারত থেকে মুক্ত এলাকায় চলে এসেছিলেন। তিনি এসেই হানাদারদের এক মহা বর্বরতা দেখতে পান। সিরাজগঞ্জ থেকে একেবারে চোরের মতো একদল হানাদার এসে ছাব্বিশা গ্রাম  জ্বালিয়া-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। সেখানে ৩৬ জন লোককে নির্বিচারে হত্যা করে। খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ছুটে যেতে যেতে তারা পালিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধে আর কোথাও হানাদাররা ওভাবে অতর্কিত চোরগোপ্তা হামলা করতে পারেনি। মুক্ত এলাকার কোথাও একটা গাছের পাতা ছিঁড়তে পারেনি। কিন্তু ব্যাপারটা ছিল একেবারে অভাবনীয় যে, সেদিক থেকে আক্রমণ হওয়ার কোনো কথাই ছিল না। হানাদারদের ঘাঁটি ছিল প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। সামনে প্রশস্ত যমুনা নদী। তারপরও কীভাবে চোরের মতো এসে গ্রামটি জ¦ালিয়ে গিয়েছিল, এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছিল। যেদিন ছাব্বিশা গ্রাম হানাদাররা জ্বালিয়া-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়, তার পরদিন ভারত থেকে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রতিনিধি দল কদ্দুসনগরে এসে পৌঁছে। খবর পেয়ে তারা ছুটে যায় ছাব্বিশার বাকি লোকদের সাহায্য-সহযোগিতা করতে। লতিফ ভাই আগাগোড়াই রাজনীতির মানুষ। আর এক কথায় বলতে গেলে সবার থেকে বড়। এখনকার মতো তখন ছিল না। তখন বড় ছোটর পার্থক্য ছিল। স্বাধীনতার আগে লতিফ ভাই ছিলেন সারা দেশে এক নামকরা ছাত্রনেতা। বৃহত্তর ময়মনসিংহে তো ছাত্র-যুবকদের প্রধান নেতা। কদ্দুসনগর ঘাঁটিতে যারা কাদেরিয়া বাহিনী পরিচালনা করত এনায়েত করীম, মোয়াজ্জেম হোসেন, বুলবুল খান মাহাবুব, ভোলা, হালিম, সিরাজ, আবদুল গফুর, মেজর হাবিব, হাকিম এরা সবাই তার ছোট। ভারত থেকে এসেই তিনি ছাব্বিশা গ্রামে ত্রাণকাজে লেগে যান। চার-পাঁচ দিনে মুক্তিবাহিনীর চাল-ডাল, কাপড়-চোপড় যা ছিল বিলি করে শেষ করে ফেলেন। তারপর তিনি চলে আসেন কেদারপুরে। কিন্তু ভূঞাপুর ঘাঁটি একদম কপর্দকশূন্য। খাওয়া-দাওয়ার মতো অবস্থা নেই। খাওয়া-দাওয়া যদিও এলাকার লোকজন ব্যবস্থা করে দিতেন, কিন্তু অন্যান্য খরচের চার পয়সাও তাদের হাতে ছিল না। খবর পেয়ে হেডকোয়ার্টার থেকে টাকা-পয়সা ও অন্যান্য জিনিস পাঠানো হয়। এরপর এলাসিন ঘাটের হানাদারদের হাতে শহীদ দুই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে কেদারপুর গেলে কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ৫০-৬০ টাকায় এক টুকরো জায়গা কিনে সেখানে তাদের দাফন করা হয়। ইদানীং শুনছি সেই কবরের গা-ঘেঁষে রাস্তা করা হয়েছে। হয়তো একদিন শুনব সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরই তুলে ফেলা হয়েছে। কারণ এখন স্বাধীনতার বীর সেনানীদের তেমন দরকার নেই। এখন স্বাধীনতার হালুয়া রুটির দরকার। ভাগাড়ের শকুনির মতো সেই হালুয়া রুটিই অনেকে গো-গ্রাসে গিলছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা অনেকেই মনে রাখার চিন্তাও করছে না।

আজকের এই দিনে আমরা ছিলাম চৌধুরী মালঞ্চের কাছে। কেদারপুর থেকে পায়ে হেঁটে লাউহাটি, দেলদুয়ার, সেখান থেকে এলাসিন। এলাসিন থেকে হিংগানগরের সেতু ভেঙে চুরমার করে দিয়ে এসেছিলাম চারাবাড়ী, পোড়াবাড়ী। চারাবাড়ীর প্রখ্যাত দালাল গোয়ালপাড়ার আকালু মন্ডলকে গ্রেফতার করে হেডকোয়ার্টারে পাঠিয়ে দিয়ে চৌধুরী মালঞ্চে রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে হাজির হয়েছিলাম নলিনে। সেদিন ছিল ৬ ডিসেম্বর। আগামীকাল সকালেই সেই মহান ৬ ডিসেম্বর। যেদিন ভুটান এবং মহান ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। আমরা সেদিনই বেশ কয়েকটি হর্ন লাগিয়ে কয়েক হাজার উদগ্রীব মানুষ নিয়ে সভা করেছিলাম। অত উৎসাহ-উদ্দীপনাময় সভা আমার জীবনে খুব একটি দেখা হয়নি। মারাত্মক ভয় ছিল আকাশপথের আক্রমণের। যদিও আমাদের হাতে অ্যান্টি এয়ারক্রাফট বা বিমান বিধ্বংসী কামান ছিল না। আমাদের হাতের মেশিনগান, মিডিয়াম মেশিনগান আকাশের দিকে তুলে তা দিয়েই মোকাবিলা করতে চাইতাম। যদিও আমাদের ওপর খুব বেশি বিমান হামলা হয়নি। চার-পাঁচটা যা হয়েছে তা আমরা মোকাবিলা করেছি এবং তাতে আমাদের একজনও হতাহত হয়নি। এসবই আল্লাহর দয়া। আল্লাহ রাজিখুশি না থাকলে কোনো বিজয়ই আসত না। আমাদেরও বিজয় এসেছিল আল্লাহর দয়ায় আমাদের রক্ত ঘামে। অন্য কোথাও অন্য কোনো দিন এ নিয়ে লিখব। আজ এগোতে চাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাষ্ট্রের জন্য এক অবশ্যপালনীয় কর্তব্য। অনেক সময় অনেক কিছু গায়ের জোরে করা হয়, অনেক কিছু করার চেষ্টা করা হয়। দশম, একাদশ এরকম আরও অনেক নির্বাচন শুধু দেখানোর জন্য হয়েছে, পাতানো নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই ওসব করেছে। বিএনপি যা করতে পারে আওয়ামী লীগের তা শোভা পায় না। কিন্তু আওয়ামী লীগও তা করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই। অথচ সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই। কিন্তু তবু বিএনপির দাবি তারা তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এমন দাবি প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল করতে পারে। দাবি করা কোনো অন্যায় নয়। রাজনৈতিক দলের কাজই দাবি করা, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সেই দাবি আদায় করা। যখনই জনগণ বিরোধী দলের পক্ষে তখনই তাদের দাবি আদায় হয় এবং হবে। জনগণ সঙ্গে না থাকলে, জনগণ আগ্রহী না হলে সে যত বড় দলই হোক তার বা তাদের দাবি কখনো আদায় হয় না, হবে না। কয়েক বছর যাবৎ বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। কিছুদিন আগে তারা বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। সরকারের মারাত্মক বাধার মধ্যে তাদের ব্যাপক সমাবেশ হয়েছে। যদিও তাদের সে সমাবেশগুলোতে জনতার চেয়ে দলীয় নেতা-কর্মী অনেক বেশি ছিল। সরকারি বাধায় সব সমাবেশ উপচে পড়া ভিড় হয়েছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত তারা ভালোই ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরে এসে আন্দোলন সামাল দিতে না পেরে তারা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন তো আবার ২০১৪-১৫ সালের মতো লাগাতার হরতাল-অবরোধ দিয়ে আরও পিছিয়ে পড়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনি রেল চলতে শুরু করেছে। গাড়ি প্ল্যাটফরমে এসে গেছে, টিকিট কাটা শেষ, যাত্রীও অনেকে গাড়িতে সওয়ার, চলতে শুরু করবে ১৮ তারিখ থেকে, গন্তব্যে পৌঁছবে ৭ জানুয়ারি। মুখে যাই বলুক, বিএনপির এখন তেমন করার কিছু নেই। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ এবং সাজা স্থগিত অবস্থায় আছেন। আরেক নেতা তারেক রহমান লন্ডনে। বিদেশে বসে সম্পূর্ণ বিদেশিদের সহায়তায় আর যা কিছু হোক, গণতন্ত্র চলতে পারে না, কখনো কোনো দেশে চলেওনি। আমেরিকার ক্ষমতায় বাংলাদেশে রাজনীতি করা চলে না।

নির্বাচনি মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ছিল ৩০ নভেম্বর। বহু মানুষ বা প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছে। আমরা অনেক আগেই বলেছিলাম, কমিশন যদি সরকারি প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিতে পারে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব। তাই আমরা অংশ নিয়েছি। ২-৩ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ছিল। নানা ষড়যন্ত্রের কারণে সেই ২০০৮-০৯ সাল থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারিনি। জানি আমাদের জীবনটাই ষড়যন্ত্রে নিমজ্জিত। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব-মোনায়েমের সময় আমরা ছিলাম পাকিস্তান সরকারের শত্রু। স্বাধীনতার তিন বছর যেতে না যেতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলে তার প্রতিবাদ করে যে বাংলাদেশ রক্ত ঘামে তৈরি করেছিলাম সেই বাংলাদেশের শত্রু হয়ে গেলাম। দীর্ঘদিন নির্বাসনে কাটিয়ে ’৯০ -এ দেশে ফিরে আবার সেই শত্রুতায় পড়লাম। জেলে গেলাম। তখন এক নির্বাচন হলো। এক রাজাকারের কাছে ১০০০ ভোটে হেরে গেলাম। জেল থেকে বেরিয়ে সারা দেশে উল্কার মতো ছুটে বেড়ালাম। ’৯৬-এর নির্বাচনে যারা ১০ জন লাখের ওপরে ভোট পেয়েছিল আমিও তাদের একজন। সরকার গঠিত হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তারা অনেক কথা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের কথা এবং কাজে অতটা মিল পেলাম না। তাই আওয়ামী লীগ ছেড়েছিলাম। বর্তমান আওয়ামী লীগ ছাড়লেও আমাদের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর আদর্শই আমাদের আদর্শ। কিন্তু কে শোনে কার কথা। নানান সময় নানান নির্যাতনের মধ্য দিয়ে সেদিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি, যা নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছে। তাই এখন ভোটের জন্য মানুষের কাছে যাব। বয়স হয়েছে আবার নির্বাচন পর্যন্ত আল্লাহ রব্বুল আলামিন এই ধরাধামে এই চরাচরে রাখবেন কি না, তা তিনিই জানেন। টাঙ্গাইলের রিটার্নিং অফিসারের যাচাই-বাছাই কর্মকান্ড আমার ভালোই লেগেছে। কিন্তু খারাপ লেগেছে এমপি এবং মন্ত্রীরা পুরো ক্ষমতা নিয়েই চলাফেরা করছেন। এটা তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো না। শুনেছি, মানিকগঞ্জের মন্ত্রী জাহিদ মালেক কী করে আওয়ামী লীগ হলো, কোথায় তার খুঁটির জোর তেমন কিছুই জানি না। তবে তার বাবা কর্নেল মালেক মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে ছিলেন। একসময় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি কখনো জনবান্ধব ছিলেন না। মানুষের সঙ্গে তার এবং তার লোকজনের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ২৯ তারিখ, ৩০ তারিখ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ছিল। জনাব জাহিদ মালেক ২৯ তারিখ সকাল থেকে প্রায় ৪টা পর্যন্ত অফিসারদের নিয়ে মিটিং করেছেন। যেটা নির্বাচনি নীতিমালা-বিরোধী। যাতে অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিতে এবং জমা দিতে অসুবিধায় পড়েছেন। অন্যদিকে শুনলাম, কুমিল্লার ডিসি বাহাদুর ২৫১, কুমিল্লা-৩, মুরাদনগর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী বছির আহমেদের মনোনয়ন গ্রহণ করতেই চাচ্ছিলেন না। কী হয়েছে? না, যার স্বাক্ষরে মনোনয়নপত্র তিনি কে? তিনি কীভাবে স্বাক্ষর করলেন এ সমস্ত নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রার্থীকে বিব্রত করেছেন। অথচ দেশের অন্যান্য স্থানে সবকটি মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে এবং তা গ্রহণ করা হয়েছে। যার স্বাক্ষরে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সেটা নির্বাচন কমিশনকে কয়েকদিন আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাধারণত আমাদের দলে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করতেন আমাদের সাধারণ সম্পাদক বীরপ্রতীক হাবিবুর রহমান। আজ মাসাধিক প্রায় অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। তাই তিনি কর্মকান্ড চালাতে পারছেন না। আমার দলীয় মনোনয়নপত্রও কিন্তু সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ারের স্বাক্ষরে জমা দেওয়া হয়েছে। কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেনি। তাই নির্বাচন কমিশনকে বলব, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ এবং অন্য কোনো জায়গায় যদি এরকম মুরগির আত্মার রিটার্নিং অফিসার থেকে থাকে তাহলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হোক। এতে নির্বাচন সুন্দর হবে, নির্বাচন কমিশনের সুনাম বাড়বে। কায়মনে আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করি, উৎসবমুখর পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক এবং আমাদের নির্বাচন সারা বিশ্বে প্রশংসিত হোক এবং দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাক।                            

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর