ফিলিস্তিনের গাজায় প্রতি ১০ মিনিট পরপর বোমা ফেলছে ইসরায়েল। সাড়ে তিন শ বর্গ কিলোমিটারের এ ক্ষুদ্র উপত্যকায় দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে জায়নবাদীরা। তারপর মাত্র কয়েকদিনের যুদ্ধবিরতি শেষে আবারও শুরু হয়েছে ধ্বংসযজ্ঞ। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতি ১০ মিনিট পরপরই গাজায় বোমা ফেলা হচ্ছে। দক্ষিণ গাজার লোকজনের জন্য এ বিপদ আরও বেশি উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বোমা বর্ষণের কারণে তিন থেকে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন প্রতিটি ফিলিস্তিনি। তারা তাদের সন্তানদের নিরাপদে রাখার চেষ্টা করলেও গাজায় কোথাও তেমন জায়গা নেই। ইউনিসেফের মুখপাত্র বলেছেন, দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক পদক্ষেপ গুরুতর উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গাজার উত্তরে লোকজন ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। এমন পরিস্থিতি দক্ষিণাঞ্চলে ঘটতে দেওয়া উচিত নয়’। গাজার শিশুরা আর্তনাদ করছে। বাবা-মা একের পর এক যুদ্ধের ভয়ংকর ক্ষত নিয়ে স্ট্রেচারে চিৎকার করছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা এভাবে পার করছে। কিন্তু তারা হাসপাতাল বা আশ্রয় কেন্দ্রও নিরাপদ নয়। তিন দিনের ভারী বোমাবর্ষণ শেষে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিওতে প্রচারিত খবরে বলা হয়েছে, বর্তমানে তারা খান ইউনিসের উত্তরে অভিযান চালাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে তারা গাজার দক্ষিণে স্থল অভিযানের সময় ৮০০ ‘সন্ত্রাসী টানেল’ পেয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের নির্মম হামলা সত্ত্বেও জাতিসংঘের দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। পশ্চিমা বিশ্ব এ হামলার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার বদলে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। সন্দেহ নেই হামাসের সন্ত্রাসী হামলায় নির্দয়ভাবে ইসরায়েলের নারী-পুরুষ বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষও আক্রান্ত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে সচেতনভাবে গাজার শিশু ও নারীদের ওপর অস্ত্র শানানো যুদ্ধাপরাধের শামিল। ইসরায়েলি দখলদারিরা একাত্তরে বাংলাদেশে যেভাবে বাঙালি নিধনযজ্ঞ নেমেছিল, সেভাবেই ফিলিস্তিনি নিধনে নেমেছে ইহুদিবাদীরা। এ হামলা রোধে বিশ্বসমাজকে সোচ্চার হতে হবে।