বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জলবায়ু সম্মেলন

প্রতিশ্রুতি শুধু নয় বাস্তবায়নও চাই

দেরিতে হলেও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে রাজি হয়েছে ধনী দেশগুলো। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রথম চার দিনে এ সংক্রান্ত তহবিলে ৫৭ বিলিয়ন ডলার জমা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ২৮-এর সভাপতি সুলতান আল জার এ ঘোষণা দেন। সম্মেলনের চতুর্থ দিনে জলবায়ু, ত্রাণ, পুনরুদ্ধার এবং শান্তিবিষয়ক একটি ঘোষণা গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশসহ জলবায়ু বিপর্যয় ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য বৈশ্বিক তহবিল থেকে সহায়তা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ ঘোষণা জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থা এবং অন্যান্য অর্থায়নের সুযোগ পেতে এবং এ-সংক্রান্ত প্রকল্প তৈরিতে দুর্বল দেশগুলোকে সহায়তা করবে। এতদিন জটিল আবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশসহ যেসব দেশ বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ পেতে দৌড়ঝাঁপ করেও ব্যর্থ হয়েছে, এবার অর্থ প্রাপ্তি তাদের জন্য সহজ হবে। স্মর্তব্য, জলবায়ু পরিবর্তন মানব জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনছে। বিশেষ করে সমুদ্র তীরবর্তী দেশগুলোর জন্য তা ইতোমধ্যে সাক্ষাৎ সমস্যা হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম শিকার। দেশের উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। জলাবদ্ধতা কেড়ে নিচ্ছে জীবন-জীবিকার সব উপায়। লবণাক্ততার কারণে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন কমছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা মনে করেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ২১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। এর মধ্যে বাংলাদেশে প্রায় দুই থেকে চার কোটি মানুষ এ ধরনের বিপদের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে উপকূলীয় অঞ্চলে ২০ শতাংশ মানুষের বসবাস। সোজা কথায় দেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ শিকারে পরিণত হয়েছে। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের কারণে রাজধানীর পরিবেশও বিপন্ন হয়ে পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যার সাক্ষাৎ শিকার হলেও এ জন্য দায়ী কোনো গরিব বা উন্নয়নশীল দেশ নয়। ধনী দেশগুলোর অপরিকল্পিত শিল্পায়ন আবহাওয়ায় বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। আমরা আশা করব দুবাই সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর