বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইটভাটার দূষণ

ব্লক তৈরির উদ্যোগ নিন

বাংলাদেশ সবুজ বৃক্ষরাজির দেশ। বিপুলসংখ্যক নদনদী, খাল-বিল হাওর-বাঁওড়ের দেশ। এমন দেশ আবহাওয়া দূষণের কারণে ‘অভিযুক্ত’ হবে তা কল্পনা করাও কঠিন। কিন্তু নিষ্ঠুর হলেও এটিই বাস্তবতা। বিশ্বের যেসব দেশে বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি সে সব দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম এগিয়ে। আর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং শিল্পনগরী গাজীপুর তো বায়ুদূষণে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে তুলতে ব্যস্ত। দেশের আবহাওয়া যেসব কারণে দূর্ষিত হচ্ছে তার অন্যতম কারণ ইটভাটা। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ইট তৈরির তোড়জোড় শুরু হওয়ায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। দেশে শুষ্ক মৌসুমে পাঁচ থেকে ছয় মাস ইট উৎপাদিত হওয়ায় একদিকে বায়ুমণ্ডলে ধুলাবালির প্রাদুর্ভাব বাড়ে, অন্যদিকে ইটভাটাগুলো থেকে নির্গত দূষিত উপাদানের কারণে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এ সম্পর্কিত গবেষণায় দেখা যায়, বছরে প্রায় ১৫ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড ইটভাটা থেকে বায়ুমণ্ডলে যোগ হচ্ছে। এ দূষণের ভয়াবহতা রোধে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের প্রচলিত ইটভাটাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ওই সময় থেকে সরকারি সব স্থাপনায়ও ইটের ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব ব্লক ব্যবহার করা হবে। তবে সরকারি এ ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রস্তুতি খুবই কম। দেশে ৭ হাজারের বেশি ইটভাটায় ইট তৈরি হলেও ব্লক তৈরি করছে মাত্র ৪০টি প্রতিষ্ঠান।বায়ুদূষণ রোধে সরকারের উদ্যোগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) বিল ২০১৩’ সংশোধনে বিল পাস হয় সংসদে, সেই বিল পাসের পর পর্যায়ক্রমে ইটের বদলে ব্লক ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়ার কথা। ২০২৫ সালের মধ্যে ইটভাটা বন্ধের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ নেই। দেশে ৭ হাজারের বেশি ইটভাটা রয়েছে। যাতে বছরে ২৩ শ কোটি ইট উৎপাদিত হয়। ২০২৫ সালের মধ্যে ইটভাটা বন্ধ করতে হলে এখন থেকেই ব্লক তৈরির উদ্যোগ জোরেশোরে নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর