সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদেশমুখী রোগীরা

চিকিৎসাব্যবস্থার চিকিৎসা দরকার

বৈশ্বিক মন্দায় বাংলাদেশকেও এক কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে ভুগতে হচ্ছে দেশ ও জাতিকে। তারপরও প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হচ্ছেন। এটি এড়াতে পারলে শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হতো। ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দূতাবাসে মেডিকেল ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের ভিড় দেখলে অনুমান করা যায় কী বিপুল অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে দেশের বেহাল চিকিৎসাব্যবস্থার কারণে। গত জুনে প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক দেশ হিসেবে ভারতেই ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি খরচ করেন বাংলাদেশিরা। বস্তুত দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডে মোট খরচের ৪ ভাগের ১ ভাগ হয় ভারতে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৭৩ কোটি টাকা খরচ করেছেন। মার্চে অর্থ ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৩ কোটি। এর বড় একটি অংশ খরচ হয়েছে চিকিৎসা খাতে। চিকিৎসার জন্য যাওয়ার সময় রোগীরা খরচ মেটাতে ডলার, ইউরো কিনছেন। এতে চাপ বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারেও। রোগীদের বিদেশমুখী স্রোত শুরু হলেও দেশের চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ নেই। রোগে আক্রান্ত হলে উচ্চবিত্তরা যান সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। আর মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তরা সাধ্যের মধ্যে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করান। গত বছর বাংলাদেশিদের জন্য ১৫ লাখের বেশি ভারতীয় ভিসা দেওয়া হয়েছিল, যা ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি রেকর্ড। চিকিৎসার জন্য ব্যাপক সংখ্যক রোগীর বিদেশমুখিতা প্রমাণ করেছে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থার সংকট কতটা প্রকট। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতাও বাংলাদেশি রোগীদের বিদেশমুখী হতে বাধ্য করছে। দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের অভাব না থাকলেও সুব্যবস্থাপনার অভাব প্রকট। চিকিৎসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর