বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গ্যাস সংকট

শিল্প খাতে ডেকে আনছে বিপর্যয়

শিল্পোৎপাদনের জন্য চাই ইন্ধন শক্তি। দেশের বিপুল সংখ্যক শিল্প গ্যাসনির্ভর। এক সময় সাশ্রয়ী মূল্যে গ্যাস পেত কলকারখানাগুলো। এখন গ্যাসের ক্ষেত্রে দেশ অনেকাংশে আমদানিনির্ভর হওয়ায় সরকারের কাছ থেকে উচ্চমূল্যেই গ্যাস কিনছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। কিন্তু সে গ্যাস চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। ফলশ্রুতিতে উৎপাদন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২৫-৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশের শিল্প কলকারখানায় সাধারণত শীত মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ থাকে। কারণ বিদ্যুতের চাহিদা কম হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস ব্যবহৃত হয় অনেক কম। কিন্তু এ বছর শীত মৌসুমেও গ্যাসের অভাবে ভুগছে শিল্প খাত। দেশে পাইপলাইনে সরবরাহ গ্যাসের প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে। বোরো মৌসুমের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সার কারখানাগুলোর উৎপাদন ঠিক রাখতে সেখানেও গ্যাস সরবরাহ ঠিক রাখতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ ঢাকার আশপাশের এলাকার শিল্প-কলকারখানায়। রাজধানীর অনেক এলাকায় বাসাবাড়িতেও চলছে তীব্র গ্যাস সংকট। গ্যাসের চাপ না থাকায় ঢাকার আশপাশের সিএনজি স্টেশনগুলো দিনের সিংহভাগ সময় বন্ধ থাকছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটির মেরামত কাজ চলায় সংকট বেড়েছে। কারণ আমদানি করা এলএনজির একটি অংশ ওই টার্মিনাল দিয়ে জাতীয় সরবরাহ লাইনে যুক্ত হয়। তবে দ্রুত গ্যাস সমস্যা সমাধানে কোনো আশার বার্তাও দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪ হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সোমবার পেট্রোবাংলা সরবরাহ করেছে ২ হাজার ৪৮১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি। ফলে গ্যাস সংকট কতটা প্রকট তা সহজেই অনুমেয়। দেশের শিল্প খাতে লাখ লাখ মানুষ কর্মরত। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ প্রেক্ষাপটে শিল্প খাতে জ্বালানি সরবরাহ যে কোনো মূল্যে স্বাভাবিক রাখা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর