বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জরাজীর্ণ পুরান ঢাকা

সবকিছু নতুনভাবে সাজাতে হবে

ঢাকা রাজধানীর মর্যাদা লাভ করে দিল্লির মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে আজ থেকে ৪০০ বছর আগে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ পাড়ের এ নগরী বাঙালির জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানীর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। দেড় কোটি মানুষের মহানগরী ঢাকার পুরান অংশ সোনালি ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ। তবে ঢাকার এ অংশের অনেক এলাকা সমস্যার ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে সংকীর্ণ রাস্তাঘাটের জন্য যানবাহনে চলাচল করা দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠছে। পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে রায় সাহেবের বাজার পর্যন্ত দূরত্ব বড় জোর ১ কিলোমিটার। তবে এ দূরত্ব পার হতে যে কোনো যানবাহনে দেড়-দুই ঘণ্টাও লেগে যায়। শুধু এই ১ কিলোমিটার সড়কই শুধু নয়, দয়াগঞ্জ থেকে গেন্ডারিয়া স্টেশন, যাত্রাবাড়ী থেকে দয়াগঞ্জ ব্রিজ, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে গেন্ডারিয়া থানা, নর্থব্রুক হল রোড, বুড়িগঙ্গা পাড় দিয়ে সদরঘাট-গাবতলী সড়কসহ পুরান ঢাকার বেশির ভাগ সড়ক সারাক্ষণই অচল থাকে যানজটে। পুরান ঢাকার বেশির ভাগ সড়ক সরু। যেখানে পাশাপাশি দুটি প্রাইভেট কার যাওয়া সম্ভব নয়। ধোলাইখাল টং মার্কেট থেকে কবি নজরুল কলেজ, নর্থব্রুক হল সংলগ্ন প্যারিদাস রোডের শুরু থেকে শেষ প্রান্তে হেমেন্দ্র দাস লেন পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের প্রশস্ততা কোথাও ১০ ফুটের বেশি নয়। দুটি রিকশা পাশাপাশি চলতে গেলে হরহামেশাই ধাক্কা লাগে। তখন পথচারীদের চলাচলের কোনো উপায় থাকে না। এ সড়কে ইঞ্জিনচালিত যানবাহন বা ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ঢুকলেই লেগে যায় যানজট। সেই জট কখনো কখনো রাস্তার পুরোটায় ছড়িয়ে পড়ে। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। শুধু যানজট নয়, রাস্তার পাশে আবর্জনা পড়ে থাকা পুরান ঢাকার অধিবাসীদের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরান ঢাকার বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘরের এক বড় অংশই ঝুঁকিপূর্ণ। জরাজীর্ণ ভবনে বংশপরম্পরায় বসবাস করছে মানুষ অসহায়ভাবে। এসব সমস্যার সমাধানে সবকিছু নতুনভাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এর কোনো বিকল্পই নেই। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকারকে পুরান ঢাকা সাজানোর পথে এগোতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর