বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

অমরতার দাবিদার যারা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানি ঘাতকদের প্রধান টার্গেটে পরিণত হন। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন কোনো না কোনো বুদ্ধিজীবী। তাঁদের স্মরণে প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিনম্র শ্রদ্ধায় কৃতজ্ঞ জাতি তার শহীদ সন্তানদের স্মরণ করে। ঘাতকদের প্রতি জানায় ঘৃণা। বাঙালি জাতির জাগরণে অগ্রণী ভূমিকার কারণে হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগী জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম পার্টি প্রভৃতি দলের কর্মীদের নিয়ে গড়া রাজাকার, আলবদর, আলশামসের সদস্যরা বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় অগ্রণী ভূমিকা নেয়। ২৫ মার্চ রাতেই প্রাণ হারান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কজন খ্যাতনামা অধ্যাপকসহ শতাধিক বুদ্ধিজীবী। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে ধারাবাহিকভাবে এ হত্যাকাণ্ড অব্যাহত ছিল। মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়ের মাত্র এক দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে পাকিস্তানি দোসর আলবদর বাহিনীর সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে ব্যাপকসংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যায় পাকিস্তানি হানাদারদের এ-দেশি বশংবদরা তাদের চোখ ও কানের ভূমিকা রেখেছে। আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনীর মানুষরূপী পশুরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানা দিয়ে বুদ্ধিজীবীদের চিনিয়ে না দিলে তারা যে প্রাণ হারাতেন না তা সহজেই অনুমেয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এ ঘাতক দালালরা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর থেকে ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে অপরাধীদের শেষরক্ষা হয়নি। গত এক যুগে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারে বেশ কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। আরও কয়েকজনের জন্য অপেক্ষা করছে ফাঁসির দড়ি। ঘাতক দালালদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার এ প্রয়াস অভিনন্দনযোগ্য। ঘাপটি মেরে থাকা একাত্তরের ঘাতক এবং তাদের এজেন্টরা আজও সক্রিয়। তাদের চক্রান্ত নস্যাতে সতর্ক থাকতে হবে। বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ একাত্তরের সব মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে দেশদ্রোহীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর