বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কাপ্তাই হ্রদ

ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নিন

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাশয় কাপ্তাই লেক দখল ও দূষণে অস্তিত্ব হারাতে চলেছে। দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকায় সাড়ে পাঁচ যুগ আগে তৈরি হয়েছিল কাপ্তাই লেক। কিন্তু এ লেক তৈরির পর থেকে এ পর্যন্ত ড্রেজিং না করায় তা ক্রমেই ভরাট হয়ে পড়ছে। স্মর্তব্য, ১৯৬০ সালে জল বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে সৃষ্টি করা হয় রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ। এটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাশয়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাঙামাটিতে অবস্থিত এ লেকের আয়তন ৭২৫ বর্গকিলোমিটার। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি মৎস্য উৎপাদন, নৌ-যোগাযোগ, পর্যটনসহ বিভিন্ন সুযোগ ও সম্ভাবনা গড়ে ওঠে কাপ্তাই হ্রদ ঘিরে। অথচ গত ৬৩ বছরে কাপ্তাই হ্রদের কোনো সংস্কার, ড্রেজিং বা খনন করা হয়নি। তাই বছরের পর বছর ধরে নামা পাহাড়ি ঢলে পলি ও বর্জ্যে ভরাট হয়ে যাচ্ছে হ্রদের তলদেশ। হ্রদ এলাকায় গড়ে ওঠা জেলা ও উপজেলা শহরের বিপুল পরিমাণ বর্জ্য ও ময়লা আবর্জনা পড়ছে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে। ফলে কাপ্তাই হ্রদ অস্তিত্বের সংকটে পতিত হচ্ছে। হ্রদ ঘেঁষে উভয় তীরে অনেকটা বেপরোয়াভাবে গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা। এসব কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে এ জলাশয়। কাপ্তাই হ্রদজুড়ে যেসব স্থাপনা গড়ে উঠেছে সেগুলো আপাতত উচ্ছেদ করা না গেলেও নতুন করে কোনো স্থাপনার নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষকে সজাগ হতে হবে। কাপ্তাই হ্রদের সীমানা নির্ধারণ করা গেলে অবৈধ স্থাপনা সহজেই উচ্ছেদ করা যাবে। কাপ্তাই লেক দখল ও দূষণে ভরাট হয়ে যাওয়ায় অপরূপ এ হ্রদের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। পর্যটকদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা হারাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে দ্রুত লেকে ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। কাপ্তাই লেকে বর্জ্য ফেলা বন্ধে নজরদারি বাড়াতে হবে। কৃত্রিম এই জলাশয় পার্বত্য এলাকার কৃষি কাজের সেচের পানি সরবরাহে ভূমিকা রাখছে। এ প্রেক্ষাপটে কাপ্তাই হ্রদ সুরক্ষায় কোনো হেলাফেলাই কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর