জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ১৫৩-১০ ভোটের ব্যবধানে পাস হয়েছে। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধবাজ ইসরায়েলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, চেকপ্রজাতন্ত্র ও গুয়াতেমালা ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো দেশ অবস্থান নেয়নি। ভোটদানে বিরত ছিল আর্জেন্টিনা, বুলগেরিয়া, ক্যামেরুন, ইকুয়েটরিয়াল গিনি, জর্জিয়া, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইতালি, লিথুয়ানিয়া, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য, উরুগুয়েসহ ১৪টি দেশ। বাকি ১৫৩ দেশ যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেয়। সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া এ প্রস্তাবটি মান্য করা বাধ্যতামূলক নয়, তারপরও এটি বৈশ্বিক মতামতের সূচক হিসেবে কাজ করে। এর আগে অক্টোবরে সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে ১২১, বিপক্ষে ১৪ ভোট পড়েছিল এবং ৪৪টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। কিন্তু এবারের ভোটে ইসরায়েল ব্যাপকহারে সমর্থন হারিয়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভোটের এ ফলাফলের পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলতে বাধ্য হয়েছেন, গাজায় বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘নির্বিচার’ বোমা হামলা চালিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন হারাচ্ছে, যা স্পষ্ট হয়েছে জাতিসংঘের সর্বশেষ ভোটে। যদিও এ ভোটের আগে বাইডেন বলেছিলেন, এখন পর্যন্ত ‘বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ’ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ সমর্থন করছে। এর আগে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠলে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটের কারণে সিংহভাগ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে থাকলেও তা অকার্যকর হয়ে পড়ে। ইসরায়েলের ওপর হামাসের আকস্মিক হামলায় পশ্চিমা বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করলেও এরপর ইসরায়েল গাজায় যে অমানবিক কর্মকান্ড শুরু করেছে তাতে বিশ্বজনমত তাদের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। এমনকি ইসরায়েলকে নিঃশর্তভাবে সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তিও কলঙ্কিত হচ্ছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার অবস্থান পাল্টিয়েছেন এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণার বিরোধিতা করায় ইসরায়েলের কট্টরপন্থিদের সমালোচনা করেছেন। তবে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ভূমিকা আরও স্পষ্ট করতে হবে।